মুখতার আনসারি। — ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি অবস্থায় গ্যাংস্টার তথা রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারির মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর পরিবার। তাদের দাবি, মুখতারকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করে খুন করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের এই যুক্তি মানতে নারাজ জেল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথায়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টও সে দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মুখতারের হৃদ্পিণ্ডে একটি ‘হলুদ অংশ’ পাওয়া গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। জেল সূত্রে খবর, রমজানের উপবাস ভঙ্গ করার পরেই মুখতারের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। বান্দা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুনীল কৌশল জানান, পেটের যন্ত্রণা নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সেখানেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। যদিও মুখতারের ভাই গাজ়িপুরের সাংসদ আফজ়ল আনসারি অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর দাদাকে জেলের মধ্যেই বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে। একই অভিযোগ শোনা গিয়েছে মুখতারের ছেলে উমর আনসারির কণ্ঠেও।
শুক্রবার মুখতারের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, পাঁচ চিকিৎসকের একটি প্যানেল তাঁর ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছ, মুখতারের হৃদ্পিণ্ডে একটি ‘হলুদ অংশ’ দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, রক্ত জমাট বাঁধার কারণেই এটি তৈরি হয়েছে। কতটা অংশ হলুদ হয়ে রয়েছে, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মুখতারের মৃত্যু হয়েছে। জেল থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নথিতে বলা হয়েছে, মুখতার দীর্ঘ দিন ধরেই হৃদ্রোগের সমস্যায় ভুগছিলেন। এ ছাড়াও ত্বকের সমস্যা, মধুমেহ রোগও ছিল তাঁর। পাশাপাশি, মানসিক অবসাদও গ্রাস করেছিল মুখতারকে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই আবারও মুখতারের পরিবার ‘বিষ প্রয়োগ করে খুনের’ তত্ত্ব নিয়ে সরব হয়েছে। শনিবার আফজ়ল বলেন, ‘‘মুখতারকে খুন করে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময় এলেই আমরা প্রমাণ দেব, কী ভাবে বিষ প্রয়োগ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। অপরাধীদের বাঁচাতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে।’’
মুখতারের মৃত্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। অল ইন্ডিয়া মজ়লিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, ‘'মুখতার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বার বার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করতেন। সরকার তাঁর চিকিৎসার দিকে কোনও মনোযোগ দেয়নি।’’ একই কথা বলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আমিক জামেই। তিনি মুখতারের মৃ্ত্যুর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র রাজপুতেরও। এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এক জন বিচারপতির নেতৃত্বে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি আমরা।’’