প্রতীকী ছবি।
করোনা সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা যেমন মোবাইলের রিংটোনে বাজানো হচ্ছে, তেমন ভাবেই শারীরিক নিগ্রহের শিকার মহিলারা বিচার পেতে কোথায় যেতে পারেন, রিংটোনে তা বাজানোর দাবি উঠল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। আজ কমিটির আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হওয়া মহিলাদের উপর অত্যাচার। পীড়িত মহিলারা বিচারের জন্য কোথায় সাহায্য পেতে পারেন, তা আরও সহজ করে ব্যাপক ভাবে প্রচার করার দাবি তোলেন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা।
গত মাসেই ঘটে গিয়েছে হাথরসের ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে গণধর্ষণের শিকার হয় এক দলিত কিশোরী। দিন কয়েক আগেই বিহারে এক মহিলাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গোটা দেশ থেকে যখন মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ সামনে আসছে, তখন আজ বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, মহিলাদের উপর অত্যাচার ঠেকাতে ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে, খোলা হয়েছে টুইটার অ্যাকাউন্ট। যেখানে মহিলারা গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন। সূত্রের মতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের ওই দাবিকে নস্যাৎ করে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য আজ বলেন, ‘‘এক জন মহিলা যখন নিগৃহীত হচ্ছেন, তখন তিনি কি টুইটারে গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন!’’ তাঁর দাবি, গ্রামীণ এলাকায় মানুষ টুইটার নিয়ে এখনও সড়গড় নয়। পরিবর্তে প্রদীপবাবুর প্রস্তাব, নিগৃহীত মহিলারা কোথায়, কোন নম্বরে ফোন করে সাহায্য পেতে পারেন সেই সংক্রান্ত প্রচার করা হোক করোনা সচেতনতা প্রচারের ধাঁচে। মোবাইলের রিংটোনে বাজানো হোক ওই নম্বর।
প্রয়োজনে রেডিওয়োয় আরও বেশি করে এ নিয়ে প্রচারের দাবি তোলা হয় বৈঠকে। এ ছাড়া প্রতিটি থানায় মহিলা পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো ও মহিলাদের অভিযোগ শোনার জন্য পৃথক মহিলা থানা ও মহিলা শাখা খোলার উপরে জোর দিয়েছেন অনেক সাংসদ। সরকার মহিলা নিগ্রহ দমনে একাধিক পদক্ষেপের দাবি করলেও, ধৃতদের কত জন শেষ পর্যন্ত জেলে গিয়েছে, কত জনের বিচার সম্পন্ন হয়েছে সেই পরিসংখ্যান স্বরাষ্ট্র কর্তাদের কাছে জানতে চান প্রদীপবাবু।
কমিটির বৈঠকে আজ প্রথম যোগ দেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সূত্রের মতে, বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্ত্বেও মহিলাদের উপর নিগ্রহের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে বেড়েই চলেছে। ধর্ষণের ঘটনা সত্ত্বেও থানা অভিযোগ জমা নেয় না। গ্রামেগঞ্জে মহিলাদের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও সেই ঘটনার কোনও তদন্ত হচ্ছে না বলেও বৈঠকে তাঁর দাবি।
সূত্রের মতে, দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, যে মহিলারা অভিযোগ জানাতে যাচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশের অভিযোগ থানা ফিরিয়ে দিচ্ছে। বহু ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীকে সারা দিন থানায় বসিয়ে রাখা হচ্ছে। অপরাধীদের গ্রেফতার করার পরিবর্তে হেনস্থা করা হচ্ছে অভিযোগকারিণীকে। আজ বৈঠকে মহিলা নিগ্রহ রুখতে ও শিশু পাচারকারীদের ধরতে দিল্লি পুলিশ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র কর্তারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লি পুলিশের প্রতিনিধিরা।