ফাইল চিত্র।
গত কাল শপথ নেওয়ার পর আজ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাঁর ইনিংস শুরু করলেন বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। প্রথম দিনেই বুঝিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবমূর্তি মেরামত করা তাঁর অগ্রাধিকারের মধ্যে। সদ্য বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। আর তার ঠিক দু’মাস পরই কেন্দ্রে চার নতুন মন্ত্রী বাংলা থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই ‘কিছু করে দেখানোর’ চাপ রয়েছে সুভাষবাবুদের উপর।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় মোদী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিরোধী রাজনৈতিক দল-সহ বিভিন্ন শিবিরে। কেন্দ্র যথেষ্ট টিকা না-পাঠানোয় টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি-সহ দেশের বহু প্রান্তে। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়ে এ বিষয়েও আজ সরব হন সুভাষবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সম্মিলিত ভাবে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে পৌঁছাবে। জেলায় জেলায় টিকাকরণের কী পরিস্থিতি, তা নিয়ে খোঁজ নেবেন আমাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবীরা। কোভিড চ্যালেঞ্জ বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হবে। প্রতিষেধক নিয়ে গণচেতনা গড়ে তুলব আমরা।’’
রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে সুভাষবাবু বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে প্রতিষেধক দিচ্ছেন। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি হচ্ছে। এক ব্যক্তি আমলার পরিচয় দিয়ে জাল প্রতিষেধক দিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের শাসক দলের এক সাংসদ তার সঙ্গে যুক্ত থেকে ফেঁসে গিয়েছেন। এই সমস্ত বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে জাগ্রত করতে হবে।”
মন্ত্রী জীবনের প্রথম দিনটা ব্যস্ততায় কাটল সুভাষবাবুর। সকালে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে নতুন মন্ত্রীদের বৈঠকে হাজির ছিলেন তিনি। আইআইটি-কর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত থাকতে হয় তাঁকে। রাতে ছিল মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক। তারই মধ্যে গোটা দিনই নিজের রাজ্য এবং জেলা থেকে নাগাড়ে ফোন। নর্থ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে বসে হাসিমুখে সবাকেই বলছেন, “আপনাদের শুভেচ্ছায় এই পদ পেয়েছি। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে গিয়েছেন দিনভর।”
প্রথম দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হয়ে যে ভাবে ব্যাট করা শুরু করলেন সুভাষবাবু, অদূর ভবিষ্যতে তাঁকে কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারে দেখতে পাবেন পশ্চিমবঙ্গবাসী, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। নিজের মন্ত্রকের নীতি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, “দেশে নতুন শিক্ষা নীতি ঘোষণা হয়েছে। এর রূপায়ণ হলে শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে হাতে-কলমে কাজের দক্ষতা এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ বাড়বে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। এ ব্যাপারে কেন্দ্র প্রচুর অর্থ দিচ্ছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের। তবে শিক্ষা যে-হেতু যৌথ তালিকায় রয়েছে, তাই রাজ্যেরও দায় রয়েছে তাদের বরাদ্দটুকু দেওয়ার। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রাজ্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের সঙ্গে নিজের অংশটুকু যোগ করছে না। বরং কেন্দ্রীয় বরাদ্দের কিছুটা অংশ বাদ দিয়েই খরচ করছে।”