Danish Ali Suspended

মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়ান, বিএসপির সেই সাংসদ দানিশ আলিকে সাসপেন্ডই করে দিলেন মায়াবতী

শনিবার বিএসপির তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, বহু বার দানিশকে সতর্ক করা হলেও তিনি ‘দলবিরোধী’ কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁকে বহিষ্কার করতে ‘বাধ্য’ হচ্ছে দল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৭
Share:

দানিশ আলি (বাঁ দিকে) এবং মহুয়া মৈত্র। ছবি: পিটিআই।

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সাংসদ দানিশ আলিকে সাসপেন্ড করল বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে বিজেপি যখন থেকে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে, তখন থেকেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ (অধুনা লোকসভা থেকে সাসপেন্ড)-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন দানিশ। লোকসভার এথিক্স কমিটির অন্যতম সদস্য হিসাবেও মহুয়া সংক্রান্ত বিতর্কে সরাসরি বিজেপি এবং কমিটির প্রধান বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। মহুয়ার সঙ্গেই আলোচনার মাঝপথেই তাঁকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছিল।

Advertisement

শনিবার বিএসপির তরফে সাসপেন্ড সংক্রান্ত যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তাতে বলা হয়, বহু বার দানিশকে সতর্ক করা হলেও তিনি ‘দলবিরোধী’ কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁকে বহিষ্কার করতে ‘বাধ্য’ হচ্ছে দল।

২০১৯ সালে বিএসপি প্রার্থী হিসাবে উত্তরপ্রদেশের আমরোহা লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দানিশ। দেশ জুড়ে মোদী ঝড়ের মধ্যেও জয়ী হন। বিএসপির তরফে বিবৃতিটি পেশ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সতীশচন্দ্র মিশ্র। বিবৃতিতে দানিশের উদ্দেশে বলা হয়, “২০১৮ সালে আপনি জনতা দল (সেকুলার)-এ এইচডি দেবগৌড়ার সঙ্গে কাজ করতেন। সেই সময় দুই দল এক সঙ্গে কর্নাটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। দেবগৌড়ার নির্দেশেই আপনাকে আমরোহা আসন থেকে টিকিট দিয়েছিল বিএসপি।”

Advertisement

এর পাশাপাশি ওই বিবৃতিতে লেখা হয়, “নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে আপনি (দানিশ) যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কিছুই প্রায় রক্ষা করেননি। বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও আপনি দলবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থেকেছেন। তাই আপনাকে তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” প্রকাশ্যে বিএসপির তরফে এই কথা বলা হলেও মায়াবতীর দলের একটি সূত্রের খবর, দানিশের কংগ্রেস-ঘনিষ্ঠতা ভাল চোখে দেখেননি ‘বহেনজি’।

মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের দিনেও বিরোধী সাংসদদের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে দানিশকে। শুক্রবার তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বিজেপিকে তোপ দেগে বলেছিলেন, “সংসদের নিম্ন কক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই বিরোধীদের কণ্ঠস্বরকে রোধ করা যায় না।” আর একটি বিতর্কেও সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে আসেন দানিশ। লোকসভায় চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য নিয়ে আলোচনা চলার সময়ে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরি। বিদুরির মন্তব্যের প্রতিবাদে দানিশের পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেস-সহ সব বিরোধী দল। মহুয়া সংক্রান্ত বিতর্কেও বহু বার নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে দানিশ অভিযোগের সুরে জানিয়েছিলেন যে, বিদুরির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি এথিক্স কমিটি, অথচ মহুয়ার বেলায় তারাই ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখাচ্ছে।

তবে দানিশকে সাসপেন্ড করার নেপথ্যে বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্কও দেখতে পাচ্ছেন কেউ কেউ। এমনিতে মায়াবতীর ঘোষিত অবস্থান এই যে, তাঁর দল বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের নীতি নিয়ে এগোবে। সরাসরি বিএসপি এনডিএ কিংবা ‘ইন্ডিয়া’ কোনও জোটেরই শরিক হবে না। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে চলা একাধিক দুর্নীতি থেকে বাঁচতে বিজেপির প্রতি নরম অবস্থান নিয়ে চলেন একদা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এই দলিত নেত্রী। সাম্প্রতিক অতীতে মায়াবতীকে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রায় কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। কিন্তু সমাজমাধ্যম কিংবা ভোটপ্রচারে বার বার কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই আবহে দানিশকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement