মাত্র কয়েক বর্গ মাইল ভূখণ্ডের অধিকার নিয়ে ভারত-চিন যুদ্ধ অসমের উপরে কেমন অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছিল তা নিয়ে বই প্রকাশ হল গুয়াহাটিতে। যুদ্ধের সময় চিনা বাহিনী তেজপুর পর্যন্ত চলে এসেছিল। এক দিকে চিনা আক্রমণের ভয়, অন্য দিকে ভারতীয় বাহিনীর ধরপাকড়ে আতঙ্কিত তেজপুরবাসী ভিটেমাটি ফেলে পালিয়েছিলেন। গ্রেফতার করা হয় অধ্যাপক অমলেন্দু গুহ, কলাগুরু বিষ্ণুপ্রসাদ রাভাকে।
বইটি প্রকাশ করেন অমলেন্দুবাবুর স্ত্রী তথা সমাজকর্মী অনিমা গুহ। একইসঙ্গে, ভারত-চিন যুদ্ধের ঘটনাকে সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছেন পরিচালক হীরেন বরা।
তেজপুর যুদ্ধের ইতিহাস ও সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সংকলিত বইটির নাম— ‘চিন-ভারত সঙ্ঘাতঃ একটি অবলোকন।’ মনোজ বরা সম্পাদিক বইটিতে লিখেছেন সাহিত্যিক ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবি হীরেন গোঁহাই, ইতিহাসবিদ রাজেন শইকিয়া, রাজনীতিবিদ বিজিৎ শইকিয়া, শিক্ষাবিদ রবীন বরঠাকুর, সাংবাদিক সঞ্জয় হাজরিকা, সংস্কৃতিকর্মী তথা বিষ্ণু রাভার পুত্র পৃথ্বীরাজ রাভা, চিনা বংশদ্ভুত তেজপুরবাসী জন ওয়াংসু সাইন, চাও মোং হোই, দোরজি চিরিং, ফুকসাং থাম।
বই প্রকাশ করে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন অনিমা দেবী। তিনি জানান, গর্ভবতী অবস্থায় তিনি তখন শিলংয়ে। স্বামী অমলেন্দুবাবু তেজপুর কলেজে পড়াচ্ছিলেন। যুদ্ধের সময় স্বামীর কোনও খোঁজ পাচ্ছিলেন না তিনি। পরে জানতে পারেন, ভারতীয় সেনা তাঁকে গ্রেফতার করেছে। আরও পরে খবর আসে চিন তেজপুর দখল করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘উত্তেজনায়, আশঙ্কায় ওই সময় খুব কষ্টে কেটেছিল। যুদ্ধে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল তেজপুরের।’’ তাঁর মতে, ওই যুদ্ধ ছিল সামান্য একটি ভূখণ্ডের অধিকার আদায়ের লড়াই। যার ফলে এত প্রাণহানি। এতগুলি মানুষের ভিটেছাড়া হওয়া।
পৃথ্বীরাজবাবু জানান, কলাগুরু বিষ্ণুপ্রসাদকে কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখ হয়েছিল। পৃথ্বীরাজ ও তাঁর ভাই প্রাণভয়ে নগাঁও পালানোর জন্য তেজপুর ফেরিঘাটে যান। সেখানে এক ছেলেধরার কবলে পড়েন তারা। কোনওমতে পালিয়ে বাড়ি আসেন।
উইংহিং থাম জানান, তখন অসমে থাকা চিনা বংশদ্ভূতদের প্রায় সকলকে চর সন্দেহে গ্রেফতার করে ভারতীয় বাহিনী। তাঁদের হয় জেলে, না হলে দেওলি ডিটেনশন শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেককে রাজস্থান হয়ে চিনেও ফেরত পাঠানো হয়। মাঝপথেই অনেকে মারা গিয়েছিলেন। এক মাস যুদ্ধ চললেও রাজস্থানের দেওলিতে চিনা পরিবারগুলিকে প্রায় ৬ বছর জেলে থাকতে হয়।
ভারত-চিন যুদ্ধে অসমের দুরবস্থার কথা তুলে ধরতে জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী পরিচালক হীরেন বরা ‘সীমা ১৯৬২-অ্যান আনটোল্ড স্টোরি’ নামের সিনেমা তৈরিতে হাত দিয়েছেন। সেই সময় ভারতীয় বাহিনীর হাতে তেজপুরবাসীকে যে হেনস্থা হতে হয়েছিল, তার উল্লেখ থাকছে ছবিতে। যুদ্ধের ভয়াবহতা, মানবাধিকার চিত্রনাট্য লেখা শেষ। তিনি জানান, তেজপুরের শিশুশিল্পী রদালি বরা, তেজপুরে জন্ম হওয়া পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা জর্জ বেকার ও মুম্বইয়ের অভিনেত্রী রোহিনী হাতাঙ্গাদি ছবিতে অভিনয় করছেন। নভেম্বর থেকে শুটিং শুরু হবে।
আজমলকে তোপ। বদরউদ্দিন আজমলের জন্যই দলের ভরাডুবি হয়েছে— আজ এমনই অভিযোগ করলেন করিমগঞ্জ জেলা ইউডিএফের প্রাক্তন সভাপতি আব্দুল মালিক চৌধুরী। ভোটগণনার এক দিন আগে আজমল করিমগঞ্জে এসে দলবিরোধী কাজের জন্য আব্দুল মালিক চৌধুরীকে নিলম্বিত করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ইউডিএফ প্রধান দলের কর্মীদের গুরুত্ব দেন না।