প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাবার বিরুদ্ধে সন্তানের মনে ‘বিদ্বেষ’ সৃষ্টি করা ‘নিষ্ঠুরতা’র সমান। এই কারণেই ‘বিবাহবিচ্ছেদ’ মঞ্জুর করা যেতে পারে, এমনই মনে করছে আদালত। মেয়ের জন্মের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেয় না স্ত্রী, এমন অভিযোগ তুলে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই সঙ্গে ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর আবেদনও করেছিলেন। সেই মামলার শুনানিতে আদালত মহিলার বিরুদ্ধেই ‘রায়’ দিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের বিচারপতি শীল নাগু এবং বিচারপতি বিনয় সরফের ডিভিশন বেঞ্চে ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর আবেদন জানিয়েছিলেন জবলপুরের এক বাসিন্দা। সেই মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘মামলাকারী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সমস্ত গন্ডি ছাড়িয়েছে। নিষ্ঠুরতা কখনই নির্দিষ্ট একটি সংজ্ঞা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।’’ আদালত আরও বলেছে, ‘‘সন্তানকে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি করা নিষ্ঠুরতার সমান।’’ তার পরই মামলাকারীর ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর আবেদন মঞ্জুর করে দেয় হাই কোর্ট।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে মামলাকারীর সংসার ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যান তাঁর স্ত্রী। সে সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সে বছরই ৪ ডিসেম্বর মেয়ের জন্ম দেন মামলাকারীর স্ত্রী। কিন্তু বার বার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারেননি জবলপুরের ওই বাসিন্দা। অগত্যা আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
২০১৭ সালের ১৮ মে জবলপুরের পারিবারিক আদালত তার নির্দেশে জানায়, বাবার সঙ্গে তাঁর মেয়েকে দেখা করতে দিতে হবে। অভিযোগ, সেই নির্দেশের পরে কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। সেই মামলার শুনানিতে আদালত বলে, ‘‘একটি শিশুর বাবা-মায়ের উভয়ের ভালবাসা এবং স্নেহ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। একই ভাবে, বাবা-মায়েরও সন্তানের ভালবাসা পাওয়ার অধিকার আছে।’’ তার পরই আদালত বলে, ‘‘মামলাকারীর সঙ্গে তাঁর সন্তানকে দেখা করতে না দিয়ে এক জন মা তাঁর দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছেন।’’