এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
প্রেমিককে বিয়ে করতে না পেরে ক্ষোভে এবং রাগে একমাত্র মেয়েকে খুন করলেন এক তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির অশোকবিহার এলাকায়। গ্রেফতারির পর ধৃতের বয়ানে চমকে গিয়েছেন তদন্তকারীরাও।
শুক্রবার উত্তর-পূর্ব দিল্লির দীপচাঁদবন্ধু হাসপাতাল থেকে একটি ফোন পায় পুলিশ। জানানো হয়, একটি শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে দেখা হয়, শিশুটির গলায় দাগ রয়েছে। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়েছে বছর পাঁচেকের মেয়েটিকে। মৃত শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। বেশ খানিক ক্ষণ পর ওই তরুণী জানান, মেয়েকে তিনিই খুন করেছেন! কিন্তু কেন?
অভিযুক্তা পুলিশকে জানান, স্বামী তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। তার পর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। কিছু দিন আগে ইনস্টাগ্রামে রাহুল নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। প্রেমিকের কাছাকাছি থাকবেন বলে বাড়ি ছেড়ে দিল্লির অশোকবিহার এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল, আবার বিয়ে করে নতুন করে জীবন শুরু করবেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ে। তরুণীর দাবি, প্রেমিকের পরিবার তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে প্রথমে আপত্তি করেনি। কিন্তু যখন তারা শোনে তাঁর একটি সন্তান রয়েছে, তখন বিয়ে দিতে বেঁকে বসে। ওই ঘটনায় ভেঙে পড়েন তিনি। হতাশায় ভুগছিলেন। তাই রাগের বশে একমাত্র মেয়ের গলা টিপে ধরেছিলেন শুক্রবার।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী এ-ও জানান, আদতে তিনি হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা। কিন্তু স্বামীর অবর্তমানে শ্বশুরবাড়িতে টেকাই দায় হয়ে উঠেছিল তাঁর। পুলিশের কাছে তরুণী দাবি করেন, শ্বশুরবাড়ির এক সদস্য তাঁর মেয়েকে যৌন নিগ্রহ করতেন। ব্যক্তিগত এবং সাংসারিক জীবনে যখন তিনি বিধ্বস্ত, তখনই সমাজমাধ্যমে দিল্লির যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপ। কিছু দিনের মধ্যে একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। আবার ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সোজা দিল্লি চলে এসেছিলেন। কিন্তু সংসার করা আর হয়নি। প্রেমিকও জানিয়ে দিয়েছেন, পারিবারিক বাধা উপেক্ষা করে এই সম্পর্ক আর টেনে নিয়ে যেতে চান না। সব মিলিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। তার জেরেই মেয়ের গলা টিপে ধরেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারেননি।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, শিশুকে খুনে অভিযুক্ত মায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩, ৬৫(২) এবং পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। শীঘ্রই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হবে।