ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
১০ বছরের অপেক্ষা। তার পরই খুনের ‘বদলা’। পর পর গুলি। একই পরিবারের ৬ জন নিহত হলেন।
ঘটনা মধ্যপ্রদেশের মোরেনার লেপা গ্রামের। চম্বলে একটা প্রবাদ বহুল প্রচলিত, ‘মানুষ বুড়ো হতে পারে, কিন্তু শত্রুতা নয়।’ আর সেই প্রবাদের ছায়াই যেন পড়েছিল লেপা গ্রামে। ১০ বছর আগে চোখের সামনে বাবাকে খুন হতে দেখেছিল বছর বারোর কিশোর। কিন্তু সময় গড়ালেও সেই ‘প্রতিহিংসার আগুন’ বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। ১০ বছর পর সেই শত্রুতার ‘বদলা’ নিলেন এক জনকে মেরে নয়, একই পরিবারের ৬ জনকে খুন করে।
সপ্তাহখানেক আগে মধ্যপ্রদেশের এই লেপা গ্রামেই দুই পরিবারের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা গ্রাম। পুরনো ‘শত্রু’ ঘরে ফেরায় ‘বদলা’র আগুনে ঝলসে উঠেছিল। বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পুত্রের হাতে বন্দুক তুলে দিয়ে মা বলেছিলেন, “শত্রু সামনে দাঁড়িয়ে। বাপের বেটা যদি হোস, তা হলে ওদের খতম কর।” মায়ের নির্দেশ পেয়েই সেই বন্দুক নিয়ে হামলা চালান ২২ বছরের অজিত। একের পর এক ন’টি গুলি চালিয়ে ‘শত্রুপক্ষের’ ৬ জনকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মোরেনার সেই ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ‘শত্রুতার’ বীজ বপন হয়েছিল ২০১৩ সালে। এক টুকরো জমি নিয়ে বিবাদ শুরু হয় ধীর সিংহ এবং গজেন্দ্র সিংহের পরিবারের মধ্যে। সেই বিবাদ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে গজেন্দ্র সিংহের পরিবারের সদস্যরা ধীর সিংহের পরিবারের দুই সদস্যকে গুলি করে খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরই গজেন্দ্র তাঁর পরিবার নিয়ে গুজরাতের আমদাবাদে পালিয়ে যান। তদন্তে নেমে পুলিশ গজেন্দ্র এবং তাঁর পুত্র বীরেন্দ্রকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে। ১৮ মাস জেল খাটেন দু’জন। দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা মেটাতে এগিয়ে আসে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ। তখনকার মতো সমঝোতাও হয় দুই পরিবারের। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ‘বদলার আগুন’ জ্বলছিল বীর সিংহের পরিবারের মধ্যে। ১০ বছর পর গজেন্দ্রর পরিবার আবার মোরেনায় ফিরলে সেই ‘বদলার আগুন’ জ্বলে ওঠে। বীরেন্দ্রর পরিবারের এক সদস্য পুষ্পা তাঁর পুত্র অজিতের হাতে বন্দুক তুলে দেন। তার পর নির্দেশ দেন, শত্রুদের খতম করে দিতে হবে। আর সেই নির্দেশ পেয়েই গজেন্দ্রর পরিবারের উপর হামলা চালান অজিত। এই ঘটনায় পুষ্পা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের তল্লাশি চালাচ্ছে। পলাতকদের বিরুদ্ধে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।