দিদার সঙ্গে সৃজা। ছবি সৌজন্য টুইটার।
ওকে পস্তাতে হবেই। বলতে বলতে চোখ ছলছল করে উঠেছিল বৃদ্ধার। পাশে বসে নাতনি। মুখে অমলিন হাসি। নাতনিকে পাশে বসিয়েই এক সাক্ষাৎকারে এই কথাগুলি ছুড়ে দিয়েছিলেন জামাইয়ের উদ্দেশে।
সৃজা। পটনার বাসিন্দা। এ বারের সিবিইএসই-র দশমের পরীক্ষায় ৯৯.৪ শতাংশ পেয়েছে সে। মায়ের মৃত্যু হওয়ার পরই বাবা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। দেখাশোনা করার কেউ না থাকায় দাদু-দিদা তাকে নিয়ে গিয়েছিল নিজেদের বাড়িতে। সেখান থেকেই পড়াশোনা। নাতনির এই ফলে দারুণ খুশি, জানিয়েছেন বৃদ্ধা।
অভিভাবকহীন একটি মেয়ে সিবিএসইতে দারুণ ফল করায় খবর চাপা থাকেনি। সংবাদমাধ্যম ছুটে এসেছিল সৃজার মামাবাড়িতে। সেখানে বর্তমানে তার দাদু-দিদিমা রয়েছেন। নাতনিকে পাশে বসিয়েই সাক্ষাৎকার দিতে দিতে বৃদ্ধার গলায় খেদের সুর ঝরে পড়েছিল।
বৃদ্ধা বলেন, “আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরই জামাই নাতনিকে ছেড়ে চলে যায়। দ্বিতীয় বার বিয়ে করে। নাতনিকে দেখোশানা করার কেউ ছিল না। আমাদের কাছে নিয়ে এসে পড়াশোনা করাই। যতটা পারছি করে যাব।” এর পরই জামাইয়ের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, “আশা করি, মেয়ের এই ফল দেখার পর ওকে পস্তাতেই হবে ওর সিদ্ধান্তের জন্য। যে ভাবে মেয়েকে ছেড়ে চলে গিয়েছে, আমার মেয়ের মৃত্যুর পর এক বারও মেয়েকে দেখতে আসেনি। এর জন্য ওকে পস্তাতেই হবে।”
দিদার পাশে বসে অমলিন মুখ, স্মিত হাসি লেগে আছে তাতে। পরীক্ষায় বিপুল নম্বর পেয়েও যেন তার কোথাও একটা শূন্যতা কাজ করছিল। সেই ভিডিয়োই শেয়ার করেছেন বরুণ গাঁধী। তিনি লেখেন, ‘ত্যাগ এবং সমপর্ণের এক অনন্য নজির। মায়ের মৃত্যুর পর মেয়েকে ছেড়ে চলে যান বাবা। নিজের পরিশ্রম এবং দাদু-দিদার অক্লান্ত চেষ্টায় সেই মেয়ে আজ ৯৯.৪ শতাংশ পেয়েছে।’ এর পরই ওই বৃদ্ধার উদ্দেশে বরুণ লেখেন, ‘মা, আপনার কোনও কাজে লাগলে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করব।’