প্রতীকী ছবি।
সারা দেশে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও কয়েক মাস দেরি হতে পারে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পরে আশা করা হয়েছিল, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। কিন্তু, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, কেরল, মধ্যপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্যে ফের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে যে সব দূরপাল্লার ‘স্পেশ্যাল’ ট্রেন চলছিল তার মেয়াদ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। রেল সূত্রের খবর, ‘স্পেশ্যাল’ ট্রেনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কয়েকটি ট্রেনের মেয়াদ জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তা থেকেই ধরে নেওয়া হচ্ছে, ১ এপ্রিল থেকে দূরপাল্লার ট্রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে না। বর্তমানে দেশে চাহিদার ভিত্তিতে প্রায় ৭৫ শতাংশ দূরপাল্লার ট্রেন চলছে।
রেল সূত্রের খবর, যে সব দূরপাল্লার বিশেষ ট্রেন চলছে তার সব কটিতে যাত্রী চাহিদা এখনও তেমন বাড়েনি। প্রধান শহরগুলির মধ্যে চলাচল করে এমন কয়েকটি ‘বিশেষ’ ট্রেনেই শুধু টিকিটের চাহিদা ১০০ শতাংশের বেশি থাকলেও সামগ্রিক চাহিদা এখনও ৬০-৬৫ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। রেলকর্তারা জানান, ট্রেনে স্লিপার এবং এসি থ্রি-টিয়ারের চাহিদা বাড়লেও প্রথম শ্রেণির চাহিদা এখনও কম। বিভিন্ন ইন্টারসিটি ট্রেনে ‘চেয়ার কার’-এর চাহিদা ৭০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের নিরিখে এই চাহিদা বেশ কম বলেই মনে করছেন তাঁরা।
রেলের একাংশের মতে, কোভিড পরিস্থিতির জন্য এখনও পর্যটন ক্ষেত্র পুরোপুরি চাঙ্গা হয়নি। প্রবীণ যাত্রীদের বড় অংশ ট্রেন এড়িয়ে চলছেন। হাওড়া এবং শিয়ালদহে শহরতলির ট্রেনে যাত্রীদের সংখ্যা এখন অনেকটা বাড়লেও তা প্রাক করোনা পরিস্থিতির তুলনায় কয়েক লক্ষ কম। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চালানোর উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। যে সব দূরপাল্লার ট্রেনে চাহিদা খুব বেশি, সেখানে মূল ট্রেনের পরে একই রুটে ‘ক্লোন’ ট্রেন চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে।’’ তবে রেলের আধিকারিকদের অন্য অংশের মতে, যাত্রী কম থাকায় আয় বাড়াতে রেল পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিগত বছরের তুলনায় পণ্য পরিবহণে আয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা
করছে রেল। প্রসঙ্গত, আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগেই বিগত বছরের পণ্য পরিবহণের সীমা অতিক্রম করেছে রেল। তবে এও ঠিক যে রেলের বিভিন্ন শ্রেণিতে আগে যে সব আর্থিক ছাড়ের সুবিধা মিলত, তা এখন স্থগিত রয়েছে। টিকিট সংরক্ষণ করতে গেলেও আগের চেয়ে যাত্রীদের অনেক বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। ফলে যাত্রী পরিবহণ খাতে ক্ষতি এড়াতেই রেল বিশেষ ট্রেনের মেয়াদ বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। যদিও তা মানতে নারাজ রেলকর্তাদের অনেকেই।