প্রতীকী ছবি
দেশের আরও তিনটি বিমানবন্দর আদানি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিলমোহর বসাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠীর হাতে এর আগে আমদাবাদ, লখনউ ও মেঙ্গালুরু বিমানবন্দর ৫০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গুয়াহাটি, জয়পুর ও তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরের লিজও আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তিরুঅনন্তপুরমের ব্যাপারে আগেই আপত্তি তুলেছিল কেরল সরকার। আজ প্রধানমন্ত্রীকে ফের চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়ে দিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কাজে তাঁরা সহযোগিতা করবেন না।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “তিনটি বিমানবন্দরের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথমেই বেসরকারি সংস্থার থেকে ১০৭০ কোটি টাকা পাবে। সেই অর্থ অন্য শহরে ছোট বিমানবন্দর তৈরিতে ব্যয় হবে। বেসরকারি সংস্থা এই তিনটি বিমানবন্দরকেও ঢেলে সাজাবে। ফলে যাত্রীরা আরও সুযোগসুবিধা পাবেন।” সরকারের বক্তব্য, আদানি গোষ্ঠী ৫০ বছরের জন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই বিমানবন্দরগুলি ঢেলে সাজানো, পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের অধিকার পাবে। চুক্তি অনুযায়ী সরকারের হাতে নির্দিষ্ট টাকা তুলে দিয়ে বিমানবন্দর থেকে বাকি আয় সংস্থার ঝুলিতে যাবে। নিলামে সব থেকে বেশি দর হেঁকেই আদানি গোষ্ঠী এই বরাত পেয়েছে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরেই শেয়ার বাজারে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর চড়তে শুরু করে। এর আগে তিনটি বিমানবন্দর লিজ পেলেও আদানি গোষ্ঠী এখনও সেগুলি হাতে নেয়নি। করোনা পরিস্থিতির জন্য বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বাড়তি সময় চেয়েছিল। সরকারের ফি মিটিয়ে দেওয়ার জন্যও বাড়তি সময় চেয়েছিল। সরকার বিমানবন্দর হাতে নেওয়ার জন্য আদানি গোষ্ঠীকে নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিলেও ফি জমা দেওয়ার সময় পিছোতে রাজি হয়নি।
তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর আদানিদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অবশ্য আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন। মোদীর সঙ্গে দেখা করে কথাও বলেছিলেন। কেরল সরকার এ বিষয়ে হাইকোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছে। তবে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, আদালতের স্থগিতাদেশ না থাকায় সিদ্ধান্ত নিতে বাধা নেই। কিন্তু এ দিন রাতে বিজয়ন ফের চিঠি লিখেছেন মোদীকে। মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই বিমানবন্দরের জমি নিখরচায় দিয়েছিল রাজ্য সরকার। আদানির হাতে বিমানবন্দর গেলে তাঁরা সহযোগিতা করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন বিজয়ন।
বিমান মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, ছ’টি বিমানবন্দরের লিজের জন্যই নিলামের ক্ষেত্রে যাত্রী পিছু মাসিক ফি বাবদ সর্বাধিক দর হেঁকে আদানি গোষ্ঠী সবাইকে চমকে দিয়েছিল। বিমান ক্ষেত্রে পা রেখেই লখনউ, মেঙ্গালুরুর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দরের তুলনায় ৫০০ শতাংশ বেশি দর হেঁকেছিল তারা। আমদাবাদের ক্ষেত্রে আদানিদের দর সর্বনিম্ন দরের তুলনায় ২০০ শতাংশ বেশি ছিল।