মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু ছিঁড়ে দুর্ঘটনা। (ডান দিকে) ১৯৭৯ সালে মাচ্ছু বাঁধ ভেঙে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে এসেছিল মোরবীতে। ফাইল চিত্র।
মোরবী। সেতু দুর্ঘটনার পর গুজরাতের এই শহরের নাম আজ কারও অজানা নেই। গত রবিবার মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু ছিঁড়ে নদীতে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। যে ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ।
তবে এই প্রথম নয়, ১৯৭৯ সালে এই মোরবীই উঠে এসেছিল সংবাদের শিরোনামে। সে বারও নেপথ্যে ছিল ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। যে শহরে মাঝেমধ্যেই জলের হাহাকার পড়ে, সেই জলই দু’বার কেড়ে নিয়েছে বহু প্রাণ। একটি গত রবিবারের ঘটনা। অন্যটি ১৯৭৯ সালের। দু’দিন আগে ঘটে যাওয়া বিপর্যয় ১৯৭৯ সালের বিপর্যয়কে মনে করিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মাচ্ছু নদী। এই নদীতেই রবিবারে ঘটনায় তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। এই মাচ্ছু নদীই ১৯৭৯ সালে প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল প্রায় ২০ হাজার মানুষের। স্থানীয়দের দাবি এমনই। ৪৩ বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই বিপর্যয়ের কথা ভেবে আজও শিউরে ওঠেন মোরবীবাসীরা।
রাজকোট জেলার জাসদান সর্দার এবং মান্ডোয়া পাহাড় এবং সুরেন্দ্রনগর জেলার চোটিলা থেকে উৎপত্তি মাচ্ছু নদীর। তার পর সেই নদী মালিয়া, মোরবী, ওয়াঙ্কানের, জাসদান এবং রাজকোটের মধ্যে গিয়ে বয়ে গিয়েছে। ১৯৭৯ সালের অগস্টে এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল মাচ্ছু নদী। এই নদীর উপর তৈরি করা বাঁধে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল জলের। দাবি, পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ জল বাঁধ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জলের চাপে বাঁধের কিছুটা অংশ ভেঙেও যায়। সেই জল মোরবীকে গ্রাস করে।
২০১১ সালে প্রকাশিত ‘নো ওয়ান হ্যাড আ টাং টু স্পিক: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ ওয়ান অফ হিস্ট্রি’জ ডেডলিয়েস্ট ফ্লাড’ নামে বইতে দাবি করা হয়েছে, প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। ১৯৮০ সালে বাঁধটিকে নতুন করে তৈরি করা হয়।
মধুপ কুমার নামে এক বাসিন্দা বলেন, “১৯৭৯ সালে মাচ্ছু বাঁধ বিপর্যয়ের ঘটনা ২০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। আবারও প্রাণ কাড়ল এই নদী।” একই কথা শোনা গিয়েছে আরও এক বাসিন্দা দীপল ত্রিবেদী নামে এক বাসিন্দার মুখে।