ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই অর্থনীতি বেহাল হতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এ কথা মানতে না চাইলেও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, আগামী দিনে আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হবে আর্থিক ক্ষেত্রে। এই অবস্থায় মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত জানিয়ে দিলেন, জিডিপির হিসেব দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে যাচাই করা যায় না। আর্থিক বৃদ্ধির হার শূন্যের নীচে না-নামলে তাকে মন্দাও বলা যায় না। তাঁর মতে, অর্থনীতির হাল নিয়ে দেশ জুড়ে ‘বড্ড বেশি কথা হচ্ছে’! আজ নাগপুরে সঙ্ঘের বিজয়াদশমীর অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘচালকের দাবি, মন্দা নিয়ে ‘অহেতুক আলোচনা’ আখেরে দেশের অর্থনীতির পক্ষেই ক্ষতিকর হচ্ছে। ভুল বার্তা যাচ্ছে শিল্প গোষ্ঠী তথা বণিক মহলের কাছে! একই সঙ্গে সঙ্ঘের দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে জানিয়ে দিলেন, দেশের স্বার্থেই বিলগ্নিকরণ এবং বিদেশি লগ্নির বিরোধী নয় সঙ্ঘ।
সরকারি তথ্য বলছে, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার (জিডিপি) এসে ঠেকেছে ৫ শতাংশে, গত ছ’বছরে যা সর্বনিম্ন। বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন। অর্থনীতির এই হাল নিয়ে সম্প্রতি মোদী সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ভাগবত কিন্তু সঙ্ঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘আমাদের দেশ ঠিকই এগোচ্ছে। বিশ্বের অর্থনীতি একটা চক্রের মধ্যে দিয়ে চলে। তাতে বাধা এলে কখনও বৃদ্ধির হার কমতে থাকে। সেটাই মন্দা। কিন্তু এখনই এ নিয়ে এত আলোচনার মতো কিছু হয়নি।’’
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে আবার এ দিনই দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে একহাত নেন মোদীকে। ভাগবতের মন্তব্যের কথা উল্লেখ না-করেই তিনি বলেন, ‘‘এটা মন্দা কি না, সেটা পরে দেখা যাবে। কিন্তু ব্যবসা যে বন্ধ হচ্ছে, দেশে চাকরি নেই— এ সব তো খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে। এই বাস্তবটা মানতেই হবে।’’
তবে দেশের অর্থনীতিতে সঙ্কট যে একটা এসেছে, তা কার্যত মেনে নিয়েই সঙ্ঘ প্রধান বললেন, ‘‘বিষয়টা নিয়ে সরকার যথেষ্ট সংবেদনশীল। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করাও হয়েছে। আগামী দিনে তার ফল মিলবে। তাই সরকারের প্রতি আস্থা রাখুন।’’ এর পরেই বিলগ্নিকরণ এবং বিদেশি বিনিয়োগের প্রসঙ্গে ঢোকেন ভাগবত। সঙ্ঘ যে ‘স্বদেশী’ মন্ত্রের কথা বলে, ভাগবত আজ বললেন, ‘‘এর মানে কোনও ভাবেই বাকি দুনিয়া থেকে দেশকে আলাদা করে রাখা নয়। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থ প্রয়োজন। তাই পুঁজি টানতে বিদেশি বিনিয়োগ এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
ভাগবতের মতে বিলগ্নিকরণও এই পরিস্থিতিতে একটা ভাল সমাধান। এ নিয়ে কোনও বিরোধিতা আসা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।