বুধবার দিল্লিতে নীতীশ-কেজরী। ছবি: পিটিআই।
আস্ত একটা বিমানবন্দরে জনসভা!
এমনটাই হতে চলেছে আগামী মাসের পয়লা তারিখে। বিহারের ভাগলপুরে। আর সেই জনসভায় বক্তৃতা দেবেন, আর কেউ নন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শেষ মুহূর্তে কোনও বদল না হলে ১ সেপ্টেম্বর ভাগলপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভা হতে চলেছে। আর এ জন্য মাঠ-ময়দানে ভরসা না রেখে একটি বিমানবন্দরকেই ভাড়া করে ফেলেছে বিজেপি! বিমানবন্দর অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে, এমন নয়। তবে নিয়মিত বিমান ওঠানামা করে না। কিন্তু বিশেষ বিমান এখনও এখান থেকেই যাতায়াত করে। এখানেই সভার পরিকল্পনা।
বিমানবন্দর কেন?
যুক্তি রয়েছে তার পিছনেও। আসলে পটনার গাঁধী ময়দানে ৩০ অগস্ট লালু-নীতীশ কুমারের জনসভা। ভিড় জমানোয় তাকে টেক্কা দিতেই ভাগলপুরের এই জায়গাকে বেছে নিয়েছে বিজেপি। গাঁধী ময়দানের থেকে এটি প্রায় তিন গুণ বড়। এখানে জমায়েত করে সবাইকে টেক্কা দিতে চাইছে বিজেপি। আর মোদী যাতে নীতীশদের মোক্ষম জবাব দিতে পারেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর সভা এক দিন পিছিয়েও দেওয়া হয়েছে।
অতীতে অবশ্য অটলবিহারী বাজপেয়ী, ইন্দিরা গাঁধী ভাগলপুরে এসে এখানে সভা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে বিমানবন্দরে কেউ জনসভা করেননি। বিমানবন্দরের একটি প্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে দেবে মোদীর হেলিকপ্টার নামানোর জন্য। রানওয়ে ছেড়ে বাকি এলাকায় সভার ব্যবস্থা। কেউ যাতে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের টাওয়ারে চড়ে না বসেন, সে দিকেও নজর রাখা হবে। সভাস্থলে আসা-যাওয়ার পথে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
বিহার ভোটের এই লড়াইয়ের আঁচ আজ দিল্লিতেও পৌঁছেছে। মোদী সওয়া লক্ষ কোটি টাকার বিহার প্যাকেজ ঘোষণা করে দেওয়ার পর রাজ্যে ভোটের মোড় ঘুরে গিয়েছে। নীতীশ কুমার গত কালই প্যাকেজ ঘোষণার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। যে ভাবে নিলামের ধাঁচে মোদী এই ঘোষণা করেছেন, সেটি নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। নীতীশ আজ দিল্লি এসে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়ে মোদীকে আক্রমণ করেছেন। কেজরীবাল ও নীতীশ মুখ খুলেছেন একে অপরের দাবিতে। নীতীশ ও কেজরী বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। পাশাপাশি, দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্য করার পক্ষেও সওয়াল করেন তাঁরা।
নীতীশ বলেন, ‘‘দিল্লির মানুষকে বুঝতে ভুল করেছিলেন মোদী। এ বার সেই একই ভুল করছেন বিহারবাসীর ক্ষেত্রে। শুধু ভুয়ো আর্থিক প্যাকেজে কিছু হবে না। বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে কেন্দ্রকে।’’ আর যে ভাবে নীতীশরা গত কাল থেকেই প্যাকেজের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপিও। আজ বিহার বিজেপির নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, ‘‘গোটা বিহার যখন উৎসবে ডুবে রয়েছে তখন তা হজম করতে না পেরেই নীতীশ দিল্লি পালিয়ে এসেছেন।’’ তাঁর দাবি, এত দিন ধরে বিশেষ প্যাকেজের জন্য দরবার করে এসেছেন যাঁরা, তাঁরাই এখন বিরোধের জন্য সঙ্গী খুঁজছেন।
এই চাপানউতোরের মধ্যেই সামনের সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন বিহার ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা করতে চলেছে।