হেরে যাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে নয়া যুদ্ধে মোদী

লোকসভা ভোটে হারের সমীক্ষা করে ভবিষ্যতের পথনির্দেশিকা তৈরি করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। চারশোর বেশি আসনে প্রার্থী দিয়ে একার জোরে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি আসন নিয়ে কেন্দ্রে ফের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে বিজেপি। শরিকদের নিয়ে ট্রিপল সেঞ্চুরি। পরাজয়ের কথা ভাবছেন তার পরেও? বিজেপি সূত্রের মতে, মোদী-হাওয়ায় এত আসন জিতলেও পরাজিত হয়েছেন একশোর বেশি প্রার্থী। নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শে এই পরাজিত প্রার্থীদের নিয়েই এ বারে দিল্লিতে বসছে দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

লোকসভা ভোটে হারের সমীক্ষা করে ভবিষ্যতের পথনির্দেশিকা তৈরি করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

চারশোর বেশি আসনে প্রার্থী দিয়ে একার জোরে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি আসন নিয়ে কেন্দ্রে ফের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে বিজেপি। শরিকদের নিয়ে ট্রিপল সেঞ্চুরি। পরাজয়ের কথা ভাবছেন তার পরেও? বিজেপি সূত্রের মতে, মোদী-হাওয়ায় এত আসন জিতলেও পরাজিত হয়েছেন একশোর বেশি প্রার্থী। নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শে এই পরাজিত প্রার্থীদের নিয়েই এ বারে দিল্লিতে বসছে দল। যাতে হারের কারণ সমীক্ষা করে ফাঁকফোকরগুলি পরের নির্বাচনের আগে পূরণ করা যায়। হেরে গেলেও সেই প্রার্থীরা যাতে মাটি আঁকড়ে বসে থাকেন এবং পরের বার বিজেপির প্রার্থীরা জিতে আসতে পারেন, সেটি সুনিশ্চিত করতেই এই দাওয়াই। এই প্রার্থীরা সক্রিয় থাকলে বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভাতেও তার প্রভাব পড়বে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে ৪০টি আসনে হেরেছে বিজেপি। রাহুল সিংহের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও পরাজিত প্রার্থীরা আসছেন পরশু এই বৈঠকে যোগ দিতে। থাকবেন পি সি সরকার, জর্জ বেকার, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তারকা প্রার্থীরাও।

তার আগে আগামিকালই দিল্লিতে অশোক রোডে দলের সদর দফতরে যাবেন মোদী। সেখানে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে দলের নেতাদের সমন্বয় বৈঠক হবে। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, দলগত ভাবে বিজেপিকে এখন কিছু স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি রণনীতি নিতে হচ্ছে। কয়েকটি রাজ্যে রাজ্যপাল নিয়োগ ও দলের নতুন সভাপতির নাম দ্রুত স্থির করে ফেলতে হবে। নতুন সভাপতি নিজের টিম গঠন গড়লে মোদী মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এ ছাড়া, যে সব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, তার রণনীতি তৈরির পাশাপাশি পরের লোকসভা নির্বাচনের ভিতও এখন থেকে তৈরি করে রাখতে চাইছে দল। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপও এর উপরে নির্ভরশীল। ফলে সরকার ও দল এক সঙ্গে মিলে যাবতীয় রণনীতি তৈরি করছে।

Advertisement

যে রাজ্যগুলিতে রাজ্যপাল নিয়োগ করতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। দলকে আগে স্থির করতে হচ্ছে কাকে সেখানে পাঠানো হবে। গত কাল কল্যাণ সিংহ ও লালজি টন্ডন দলের নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা রাজ্যপাল হওয়ার থেকে রাজনীতিতেই সক্রিয় থাকতে চান। কিন্তু সভাপতি ও কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ উত্তরপ্রদেশের প্রবীণ নেতাদের রাজ্যপাল করে সে রাজ্যে নিজের কর্তৃত্ব আরও বাড়াতে চাইছিলেন। নতুন সভাপতি মনোনয়নের বিষয়টিও পিছিয়ে দিতে চাইছিলেন রাজনাথ। কিন্তু মোদী মনে করেন, আগামী সোমবার সংসদের অধিবেশনের আগে নতুন সভাপতি স্থির না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের আগে নতুন সভাপতি জমি তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন না। এই অবস্থায় মধ্যপ্রদেশে সঙ্ঘের বৈঠকে রাজনাথকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

বিজেপির এক নেতা আজ বলেন, “রাজ্যপাল কারা হবেন, সেই তালিকা প্রায় তৈরি। এখন স্থির করতে হবে কোন রাজ্যে কাকে পাঠানো হবে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে এমন কাউকে পাঠানো হবে, যাতে মমতাকে কড়া বার্তা দেওয়া যায়, না কি মমতার পছন্দ অনুযায়ীই রাজ্যপাল নিয়োগ হবে, সেটি রাজনৈতিক স্তরে স্থির হবে।” যুক্তরাষ্ট্রীয় ধর্ম মেনে পশ্চিমবঙ্গকে যাবতীয় সাহায্য করার ভাবনা থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনে এক চিলতে জমিও ছেড়ে দিতে আগ্রহী নয় বিজেপি। বরং লোকসভার রেশকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আরও জমি দখলই এখন দলের লক্ষ্য

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement