নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএফপি
আগামিকাল থেকে চিনের কিনদাও প্রদেশে শুরু হতে চলেছে এসসিও সম্মেলন। আর সেখানেই বৈঠকের ফাঁকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে কথা হবে নরেন্দ্র মোদীর। উহান বৈঠকের এক মাসের মধ্যে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এটি দ্বিতীয় বৈঠক। দু’দেশই চাইছে, ডোকলাম-স্মৃতিকে পিছনে ফেলে বাণিজ্য এবং কৌশলগত সম্পর্ককে মজবুত করতে। কিন্তু তার মধ্যেই চিনকে ঘিরে কূটনৈতিক স্তরে নতুন টানাপড়েন তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায় ঝোড়ো সফর সেরে এসেছেন মোদী। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে গত দু’বছর ধরে সমুদ্র নিরাপত্তা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবাধে যান চলাচলের অধিকার নিয়ে বেজিং-এর যুদ্ধ চলছে। এবং পরোক্ষে এই সমুদ্র-যুদ্ধে শরিক ভারতও। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি ভারতকে এই যুদ্ধে বড় ভূমিকায় দেখতে চাইছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে অবাধ এবং নিরাপদ বাণিজ্য যাতে করা সম্ভব হয়, সে জন্য এ বারের সফরে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন মোদীকে। যৌথ বিবৃতিতে যার কিছু অংশ রাখাও হয়েছে। বলা হয়েছে, মোদীর ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির সফল রূপায়ণের জন্য দরজা খুলে দিতে প্রস্তুত এই দেশগুলি। কিন্তু সে জন্য এশিয়ার বড় শক্তি হিসেবে ভারতকেও আসিয়ানের হয়ে লড়তে হবে বেজিংয়ের সঙ্গে। চাপ তৈরি করতে হবে চিনের উপরে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এই মুহূর্তে চিনের সঙ্গে নতুন করে তিক্ততা তৈরি করার অবস্থায় নেই ভারত। বরং বছরের গোড়া থেকেই সাউথ ব্লক বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক অপেক্ষাকৃত মধুর করার জন্য উদ্যোগী। আবার আসিয়ানকেও হাতে রাখাটা মোদীর ঘোষিত অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে।
সরকারি সূত্রের খবর, শ্যাম এবং কূল— এই উভয়সঙ্কটের মধ্যে একটি নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে ভারত। সেটি হল সমুদ্রনীতি বিষয়ক পৃথক মন্ত্রক তৈরি করা অথবা আপাতত একজন পেশাদার সমুদ্র উপদেষ্টা নিয়োগ করা। এর ফলে রাতারাতি কোনও সমাধান হয়ে যাবে— এমন আশা অবশ্যই করা হচ্ছে না। কিন্তু এটা করা হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা চিনের কাছে একটি বার্তা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে একটি পৃথক মেকানিজম তৈরি করে বেজিংয়ের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করতে পারবে নয়াদিল্লি।