নীতীশ কুমার
দলের দুই নেতার গোলমালের জেরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শামিল হতে পারল না নীতীশ কুমারের জেডিইউ। শেষ সময়ে মন্ত্রিসভার শপথ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। যদিও মন্ত্রিসভার শপথ উপলক্ষ্যেই দিল্লিতে হাজির হয়েছেন নীতীশ কুমার-সহ জেডিইউ নেতারা। নীতীশ অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কেন্দ্র সরকারে আমরা আপাতত শামিল হব না। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা সরকারের উপরে অখুশি। সরকারে না থাকলেও সম্পর্কে কোনও পার্থক্য হবে না।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে এনডিএ-র বৈঠকে ঠিক হয়েছিল প্রতিটি শরিক দল থেকে এক জন করে পূর্ণ মন্ত্রী করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি না হলেও রাজি হয়েছিলেন নীতীশ। গত রাতে সে কথা দলের নেতাদের জানাতেই দু’জনের নাম উঠে আসে—দলের রাজ্যসভার সদস্য তথা সংসদীয় দলের নেতা রামচন্দ্র প্রসাদ (আরসিপি) সিংহ এবং মুঙ্গের লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ রাজীব রঞ্জন ওরফে ললন সিংহ। দুই নেতার নাম নিয়ে দল কার্যত দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
আরসিপি-কে পূর্ণমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন স্বয়ং নীতীশ। কিন্তু তাতে সকলে সায় দেননি। ললন সিংহকে নিয়েও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি জেডিইউ। এর পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে মন্ত্রিসভায় যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। আজ সকালে বিষয়টি নিয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপি সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। তবে তাতে লাভ হয়নি।
জেডিইউ নেতাদের দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় একটি আসন নিয়ে খুশি নন নীতীশ কুমার। তিনি দু’টি পূর্ণমন্ত্রী চেয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, রাজ্য থেকে ছ’টি আসন জিতে রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেয়েছে। জেডিইউ ১৬টি আসন জিতে একটি পূর্ণমন্ত্রী নেবে কেন? এ ক্ষেত্রে শিবসেনার উদাহারণ তুলে ধরেছিলেন বিজেপি নেতারা। ১৮টি আসনে জয়ী হলেও একটি পূর্ণমন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে শিবসেনাকে। তবে তাতে খুশি না হলেও মেনে নিয়েছিলেন নীতীশ।
রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, আগামী বছর বিহারে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের মতো বিজেপি সমসংখ্যক আসন দাবি করতে পারেন বলে আশঙ্কা নীতীশের। কিন্তু তিনি বিধানসভার সিংহভাগ আসনে লড়তে চান। সে কারণেই বিজেপির শর্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে রাজি হননি তিনি। আপাতত কেন্দ্রে সরকারের সঙ্গে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদার দাবি তুলে আন্দোলনে নামতে পারেন তিনি। তাই পিছিয়ে এসে এগিয়ে থাকতে চান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।