প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে ঘোর আপত্তিকর হিসেবে দেখছে গোটা বিরোধী পক্ষ। মোদীকে সংসদে এসে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে উত্তাল সংসদ। —ফাইল চিত্র।
বিরোধীরা সংসদে তাঁর ভাষণ শুনতে চাইলেও তিনি সেখানে মৌন থাকছেন। নোট বাতিল ইস্যুতে তিনি যা কিছু বলছেন, সবই বলছেন সংসদের বাইরে। শুক্রবারও প্রধানমন্ত্রী নোট বাতিল ইস্যুতে মুখ খুললেন। কিন্তু লোকসভা বা রাজ্যসভায় নয়, সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে। সেখানে তাঁর ইঙ্গিত, বিরোধীরা প্রতিবাদ করছেন কারণ তাঁরা নিজেদের কালো টাকা সাদা করে নিতে পারেননি। মোদীর এই মন্তব্যের খবর পৌঁছতেই উত্তাল হয়েছে সংসদ। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেছে সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ দিন ঠিক কী বলেছেন? তিনি বলেছেন, ‘‘যাঁরা নোট বাতিলের প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের সমস্যা কিন্তু আসলে সরকারের প্রস্তুতি কতটা ছিল তা নিয়ে নয়। তাঁরা আসলে নিজেরা প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাননি, সমস্যা সেখানেই।’’ আচমকা ৫০০ টাকা এ বং ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার পর দেশ জুড়ে যে নোট বিভ্রাট এবং খুচরোর আকাল দেখা দিয়েছে, তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। সরকার আরও প্রস্তুতি নিয়ে এই পদক্ষেপ করলে সাধারণ মানুষের, বিশেষত গ্রামীণ ভারতের এত হয়রানি হত না। বলছেন বিরোধীরা। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গেই বিরোধীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, সরকারের প্রস্তুতি কতটা ছিল বিরোধীরা আসলে তা নিয়ে ভাবিত নন। নিজেরা প্রস্তুতি নিতে পারেননি বলেই তাঁরা এত ক্ষুব্ধ।
সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের খবর সংসদে পৌঁছতেই উত্তাল হয়েছে সংসদ। বিরোধী পক্ষ দাবি তুলেছে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধীরা কালো টাকাকে সমর্থন করছেন। বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে যে কথা তিনি বলেছেন, তা অত্যন্ত গুরুতর। তাঁকে সংসদে এসে ক্ষমা চাইতে হবে।’’ কংগ্রেসের সুরেই সরব হয়েছে অন্য সব বিরোধী দল, এমনকী বিজেপির শরিক শিবসেনাও। বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে ক্ষমা চাইতেই হবে। তাঁকে স্পষ্ট করে এও জানাতে হবে, কাদের কাছে কালো টাকা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: স্বভাব-মৌন মনমোহন মুখর হলেন সংসদে, মোদী রইলেন নীরব