সিবিআইয়ের প্রধান পদে নিয়োগ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে স্থায়ী অধিকর্তা বাছাই করতে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নাম চূড়ান্ত হল না।
সিবিআই অধিকর্তার পদে বাছাইয়ের নিয়ম মেনে আজ প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর ও লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির বৈঠক বসে। সন্ধ্যার ওই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা জানা যায়নি। কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, চাপের মুখে বাধ্য হয়েই এই বৈঠক ডেকেছেন নরেন্দ্র মোদী। কারণ ২ ডিসেম্বর প্রাক্তন সিবিআই অধিকর্তা অনিল সিন্হা অবসর নেন। প্রথা অনুযায়ী, তার আগেই নতুন সিবিআই অধিকর্তা বাছাইয়ের কাজটি সেরে ফেলার কথা। কিন্তু কোনও বৈঠকে না গিয়ে মোদী সরকার সিবিআইয়ের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্তা রূপক দত্তকে বদলি করে দেয়। অস্থায়ী ভাবে গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস রাকেশ আস্থানাকে শীর্ষপদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিরোধীরা এ নিয়ে আপত্তি তোলেন। অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টেও এ বিষয়ে জনস্বার্থের মামলা হয়। মঙ্গলবারই সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রেও খবর, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির কথা মাথায় রেখেই সোমবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। যাতে অন্তত সুপ্রিম কোর্টে জানানো যায় যে অধিকর্তার পদে স্থায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রাথমিক বাছাই তালিকায় প্রায় ৪৫ জন উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসারের নাম রয়েছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিজি সতীশ মাথুর, ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের ডিজি কৃষ্ণ চৌধুরী, সিবিআই-এর সদ্যপ্রাক্তন বিশেষ অধিকর্তা রূপক দত্ত, দিল্লির পুলিশ কমিশনার অলোক বর্মা। তালিকায় নাম রয়েছে হায়দরাবাদের জাতীয় পুলিশ অ্যাকাডেমির অধিকর্তা অরুণা বহুগুণা ও সশস্ত্র সীমা বলের ডিজি অর্চনা রামসুন্দরমেরও। সূত্রের খবর, ১৯৭৯ ব্যাচের আইপিএস অলোক বর্মাই এগিয়ে আছেন। কিন্তু প্রার্থীদের নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। তাই চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি।
রাকেশ আস্থানাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই লগ্নি কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল সাংসদদের গ্রেফতারি, মায়াবতীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত, অগুস্তা কপ্টার তদন্তে গাঁধী পরিবারের নাম জড়িয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, আস্থানাকে বসিয়ে সিবিআইকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছেন মোদী। তিনি আস্থানাকেই স্থায়ী ভাবে সিবিআইয়ের শীর্ষপদে বসানোর জন্য চেষ্টা করতে পারেন বলেও রাজনৈতিক শিবিরে সংশয় রয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, তিন সদস্যের কমিটির সামনে প্রাথমিক বাছাই তালিকায় আস্থানার নাম নেই। কারণ তিনি অপেক্ষাকৃত নবীন অফিসার।