ফাইল চিত্র
কৃষি সংস্কারের লক্ষ্যে আনা তিন বিল নিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার চব্বিশ ঘণ্টা না-পেরোতেই প্রধানমন্ত্রীর দলের বিরুদ্ধে মিথ্যে বলার পাল্টা অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। দাবি করলেন, কংগ্রেসের ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইস্তেহারে ওই সমস্ত সংস্কার থাকার যে দাবি বিজেপি করছে, তা আসলে ‘অল্প পড়ার ভয়ঙ্করী’ ফল!এরই মধ্যে অবশ্য রবিবার রাজ্যসভায় ওই তিন বিল পাশে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না মোদী সরকার। যে কারণে হুইপ জারি করা হয়েছে বিজেপি সাংসদদের। সংখ্যার জোরে বিল রুখে দেওয়ার বিষয়ে তেমন আশাবাদী নয় বিরোধী শিবিরও। কিন্তু দেশ জুড়ে চাষিদের বিক্ষোভ দেখার পরে বিরোধিতার সুর চড়া তারে বাঁধছে অনেক রাজনৈতিক দলই। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি, একজোট হয়ে এই বিলের বিরোধিতা করবে ১১টি দল। এই বিলের বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছে আম আদমি পার্টিও।শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে যে, সরকারি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) মিলবে না। মনগড়া কাহিনি শোনানো হচ্ছে যে, চাষিদের থেকে আর ধান-গম কিনবে না সরকার। এ সব পুরোপুরি মিথ্যে, ভুল। চাষিদের সঙ্গে প্রতারণা।” চাষিদের সরাসরি বাজারে বিক্রির যে সুবিধার কথা বিলে বলা হয়েছে কিংবা এপিএমসি আইন তুলে দেওয়ার যে প্রস্তাব সংসদে আনা হয়েছে, তা কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারেও ছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
কিন্তু চিদম্বরমের দাবি, ইস্তেহারে আগে পণ্য বাজারে নিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির কথা বলা হয়েছিল। লেখা ছিল, পছন্দসই জায়গায় তা বিক্রির সুবিধা দেওয়ার কথা। ধাপে ধাপে আগে এই সমস্ত শর্ত পূরণ হলে, তবেই এপিএমসি আইন তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন তাঁরা। চিদম্বরমের অভিযোগ, এখন এই বিষয়ে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে এনে ডাহা মিথ্যে বলছে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি।প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর প্রশ্ন, চাষিরা সরকারি মন্ডির বাইরে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে ফসল বিক্রি করলে সেই ব্যক্তি বা সংস্থা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকে বেশি দরে তা কিনতে বাধ্য থাকবেন, সেই কথা বিলে লেখা নেই কেন? কী ভাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, দর কষাকষিতে একই ক্ষমতা থাকবে ছোট চাষি এবং দৈত্যাকার কর্পোরেট সংস্থার? এই বিলে ছোট-মাঝারি চাষিদের বিপদ বাড়বে এবং দেশে খাদ্যের নিরাপত্তাও ধাক্কা খাবে বলে তাঁর অভিযোগ।যে প্রধানমন্ত্রী চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলেন, কর্পোরেট-স্বার্থে তাঁর সরকার কী ভাবে সেই কৃষকদের আয় নিয়েই ছিনিমিনি খেলতে পারেন, সেই অভিযোগে রবিবারের রাজ্যসভা উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
হুঁশিয়ারি বাঘেলের: পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের সঙ্গে যোগ দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। তাঁর দাবি, এই বিল পাশের ফলে এর ফলে আগামী দিনে শুধু কৃষকের নয়, ক্ষতি হবে আমজনতারও।