ফাইল চিত্র।
আরোগ্য নিয়ে প্রতিযোগিতা ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে।
কোভিড প্রতিষেধকের ১০০ কোটি ডোজ় নিয়ে এর আগেই জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সেই প্রচারকেই তিনি আরও বাড়ালেন উত্তরপ্রদেশে। সিদ্ধার্থনগর থেকে উত্তরপ্রদেশে ৯টি মেডিক্যাল কলেজের উদ্বোধন করলেন। পাশাপাশি নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী থেকে উদ্বোধন করলেন চৌষট্টি হাজার কোটি টাকার প্রকল্প— আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশনেরও। অন্য দিকে, কংগ্রেসের উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা বঢরার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, কংগ্রেস সরকার গড়লে প্রত্যেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বিনামূল্যে করাতে পারবেন।
মোদী যথারীতি নিজেদের প্রকল্প ঘোষণার ভাঁজে ভাঁজে পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কেন্দ্র এবং রাজ্যে একই দল অর্থাৎ ‘ডাবল ইঞ্জিন’-এর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে কেন্দ্রীয় প্রকল্প উদ্বোধনের মোড়কে ভোটের প্রচারই করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
মোদীর কথায়, “স্বাধীনতার পর থেকে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্য যা যা করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি। আগে স্বাস্থ্য পরিষেবা টাকা কামানোর জায়গা ছিল, দুর্নীতির আখড়া ছিল। আজ কেন্দ্র এবং রাজ্য একযোগে দলিত, পিছড়ে বর্গ, গরিব, মধ্যবিত্ত— সবার স্বাস্থ্য এবং আরোগ্যের জন্য কাজ করছে।” তাঁর কথায়, “মানুষের আরোগ্যের জন্য সেবায় মহাদেবের আশীর্বাদ রয়েছে। তাই সাফল্য আসতে বাধ্য।” পাশাপাশি আজও ‘ভোকাল ফর লোকাল’ নীতির প্রচার করে দীপাবলির কেনাকাটায় স্থানীয় পণ্যকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন মোদী।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ উত্তরপ্রদেশকে ছারখার করে দেওয়ার সময় প্রমাদ গুনেছিলেন মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গঙ্গা দিয়ে ভেসে গিয়েছে মৃতদেহ, সৎকারের অভাবে। যোগীর বিরুদ্ধে রাজ্য বিজেপির ক্ষোভও সে সময় প্রকাশ্যে চলে আসে। তাই বিরোধী দলকে গুছিয়ে নিতে দেওয়ার আগেই, গত এক মাস ধরে উত্তরপ্রদেশে এসে বিভিন্ন প্রকল্পের লাগাতার শিলান্যাস করে যাচ্ছেন মোদী।
অতি সম্প্রতি অবশ্য কিছুটা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে এসপি এবং কংগ্রেস শিবিরে। এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাজ্যে ‘যাত্রা’ শুরু করেছেন। উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও লখিমপুর খেরি কাণ্ডের পর থেকেই সক্রিয় রয়েছেন।
আজ প্রিয়ঙ্কা টুইট করেন, ‘করোনা কালে সরকারি ঔদাসীন্যে উত্তরপ্রদেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বেহাল দশা সবাই দেখেছেন। এখন রাজ্য জুড়ে মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। কংগ্রেসের ইস্তেহার কমিটির অনুমতিক্রমে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস স্থির করেছে, যিনি-ই অসুস্থ হোন না কেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা হবে।’
উত্তরপ্রদেশে তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এবং লাগাতার আন্দোলনের বিষয়টি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে— এ কথা হিসাবের মধ্যে রাখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই মোদী আজ উত্তরপ্রদেশে জৈব গ্যাস প্লান্ট, আধুনিক আনাজ এবং ফলের বাজার, গ্রামীণ পরিকাঠামো সংস্কারের কথা উল্লেখ করে কৃষকদের ভবিষ্যৎ সুফলের দাবি করেছেন।