নোট বাতিলের ক্ষত মেরামতে আয়কর ও কর্পোরেট করের হার কমাতে হবে। নগদের জোগানের অভাবে ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। তাই উৎপাদন ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে কমাতে হবে আমদানি শুল্ক। নোট বাতিলের ফলে গ্রামের অর্থনীতিও মার খেয়েছে। তাই চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ফসলের সঠিক দাম পাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। বাজেটের প্রস্তুতি পর্বে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় এমনই পরামর্শ শুনলেন নরেন্দ্র মোদী।
অর্থমন্ত্রী বরাবরই বাজেটের আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বারও অরুণ জেটলি তার অন্যথা করেননি। কিন্তু এই প্রথম বাজেট নিয়ে নীতি আয়োগের কর্তা ও আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নোট বাতিলের জেরে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমতে পারে বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির হাল-হকিকত বুঝতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মোদী।
এ বছর বাজেট পেশের দিনক্ষণ এগিয়ে আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিনের বদলে বাজেট পেশ হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে। আজ বৈঠকে মোদী জানান, অর্থনীতিতে যাতে বাজেটের প্রভাব পড়ে সেই কারণেই দিনক্ষণ এগিয়ে আনা হয়েছে। কারণ এত দিন খরচ মঞ্জুর হতো বর্ষার ঠিক আগে। ফলে বর্ষার আগের মাসগুলিতে সরকারি প্রকল্পগুলিতে তেমন কাজ হতো না। আজ ‘ইকনমিক পলিসি-দ্য রোড অ্যাহেড’ শীর্ষক ওই বৈঠকে মূলত তিনটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চান তিনি। কৃষি, কর্ম সংস্থান, শিক্ষা-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং বাজেট। সরকারি সূত্রের মতে, নোট বাতিলের ফলে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তার দাওয়াই বাছতেই এই তিন ক্ষেত্রকে বেছে নিয়েছেন মোদী। বৈঠকে হাজির বিশেষজ্ঞরা মোদীকে সাফ জানান, ২০২২-এর মধ্যে সরকার চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু নোট বাতিলের পরে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কৃষি পণ্যের বাজার ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। ফসলের সঠিক দাম সুনিশ্চিত করতে হবে।
সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আয়কর ও কর্পোরেট করের হার কমানোর দাবি তুলেছিল শিল্পমহল। শিল্পের ক্ষেত্রেও করের বোঝা কমানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের যুক্তি, দরকারে যে সব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে তা তুলে নেওয়া হোক। উৎপাদন ক্ষেত্রের জন্য সব পণ্যের আমদানি শুল্ক ৭% করার দাবি উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক ক্ষেত্রে কাঁচামালের চেয়ে মূল পণ্যের আমদানি শুল্কের হার কম। কর ব্যবস্থার সরলীকরণ প্রয়োজন।