প্যারেডে এ-স্যাট মিসাইল শক্তি। ছবি: পিটিআই
একে একে আসছে উপগ্রহ ধ্বংসকারী অস্ত্র ‘শক্তি’। ‘ধনুষ’ কামান। ‘অ্যাপাচে-চিনুক’ হেলিকপ্টার। তারই মধ্যে হঠাৎই বায়ুসেনার ট্যাবলোয় প্রোটোটাইপ রাফাল বিমানের। দর্শকদের হাততালির মধ্যেই কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সামনে দিয়ে চলে গেল সেটি।
লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রচারের অন্যতম অস্ত্র ছিল রাফাল। আজ কুচকাওয়াজে রাফালের একটি মডেল তুলে ধরেই শক্তি প্রদর্শন করল মোদী সরকার। আর রাফাল নিয়ে যিনি প্রতিবাদে নেমেছিলেন, সেই রাহুল গাঁধী দিল্লিতে থেকেও অনুপস্থিত কুচকাওয়াজে। বিজেপির দাবি, রাহুল এখন দলের সভাপতি নন। দ্বিতীয় সারিতে বসতে হবে বলেই অনুপস্থিত তিনি। আজ দ্বিতীয় সারিতে ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ও তাঁর স্ত্রী। প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো।
৯০ মিনিটের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের শুরুই হয় ব্যতিক্রম দিয়ে। প্রতিবার ইন্ডিয়া গেটে অমর জওয়ান জ্যোতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এবছর প্রথা পরিবর্তন করে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। উপস্থিত ছিলেন তিন সেনা প্রধান ও চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত। কুচকাওয়াজে পুরুষ পদাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিলেন ক্যাপ্টেন তানিয়া শেরগিল। এ বারই প্রথম সিআরপিএফের পূর্ণ মহিলা বাইকবাহিনী কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। নেতৃত্ব দেন সীমা নাগ।
আরও পড়ুন: পরপর বিস্ফোরণ ডিব্রুগড়ে
দিল্লির নির্বাচন আর দু’সপ্তাহ বাকি নেই। এই আবহে আজ রাজপথে কেন্দ্র যে ভাবে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করল, তা তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকেই মনে করছেন, স্মরণকালের মধ্যে এ ভাবে প্যারেডে সামরিক শক্তির হুঙ্কার, উন্নত যুদ্ধাস্ত্রের খোলাখুলি প্রদর্শন দেখা যায়নি। রাফালের প্রোটোটাইপ থাকলেও, সুখোই-৩০, মিগ, তেজসের মতো বিমান আজ দিল্লির আকাশ চিরে বেরিয়ে যায়। সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৮টি অ্যাপাচে ও ৪টি চিনুক হেলিকপ্টার। অ্যাপাচে হেলিকপ্টার আসায় যুদ্ধের সময় কম উচ্চতা থেকে মারণ আঘাত হানার ক্ষমতা ভারতের অনেক বেড়ে গিয়েছে বলেই দাবি বায়ুসেনার। অন্য দিকে দুই ইঞ্জিনের আমেরিকায় তৈরি চিনুক হেলিকপ্টারগুলি মূলত সেনা ও গোলাবারুদ পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা শুরু করেছে বায়ুসেনা। দু’রকমের হেলিকপ্টারই আজ প্রথম বার কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। সম্প্রতি ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ হয়েছে উপগ্রহ ধ্বংসকারী মিসাইল ‘শক্তি’। দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল সেটিও। বায়ুসেনার পাশাপাশি নৌসেনা কলকাতা ক্লাস ডেস্ট্রয়ার ও কলাবরি ক্লাস সাবমেরিন প্রথম বার জনসমক্ষে আনে।
শক্তি প্রদর্শন হল জমিতেও। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক, কে-৯ বজ্র গান, দু’টি স্থানান্তরণযোগ্য স্যাটেলাইট টার্মিনাল ও দু’টি ভূমি থেকে আকাশ মিসাইল কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। সেটি ছাড়াও বফর্সের চেয়েও শক্তিশালী কামান ধনুষ প্রথম বার রাজপথে আসে।