বাজার চাঙ্গা করতে কর ছাড়ের ভাবনা

নোট বাতিলের ক্ষতে কর ছাড়ের মলম। বাজেটের রূপরেখা তৈরি করতে বসে নরেন্দ্র মোদী সরকার আয়কর ও কর্পোরেট করে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৫
Share:

নোট বাতিলের ক্ষতে কর ছাড়ের মলম।

Advertisement

বাজেটের রূপরেখা তৈরি করতে বসে নরেন্দ্র মোদী সরকার আয়কর ও কর্পোরেট করে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছে। ব্যাঙ্ক-এটিএমের সামনে লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তির ক্ষোভ প্রশমিত করতে এ যেন মন ভাল করার দাওয়াই।

পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট অচল করে দেওয়ায় বাজারে আচমকা নগদ জোগান কমেছে। ফলে মার খেয়েছে ব্যবসা। শিল্পের উৎপাদনও কমার আশঙ্কা। বাজেটের প্রস্তুতি পর্বে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকে বসে শিল্পমহল দাবি তুলেছে, কর্পোরেট কর কমানো হোক। শিল্পপতিদের ক্ষোভ কমাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অর্থ মন্ত্রকের ভাবনাও তেমনই। আয়করের কাঠামোয় রদবদল এনে মধ্যবিত্তের হাতেও বেশি টাকা জুগিয়ে দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে।

Advertisement

উদ্দেশ্য দু’টি। প্রথমত, নোট বাতিলের ফলে গরিব মানুষের সঙ্গে সাধারণ মধ্যবিত্তও ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, কালো টাকার কারবারিদের সিন্দুক লুট করে তিনি গরিব কল্যাণে টাকা ঢালবেন। আয়করে ছাড় দিলে মধ্যবিত্তের ক্ষোভও কমতে পারে। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা। আয়করে ছাড় দিলে সাধারণ মানুষের হাতে খরচ করার টাকা বেশি থাকবে। বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে।

অরুণ জেটলি গত বাজেটেই ঘোষণা করেছিলেন, কর্পোরেট করের হার ৩০ শতাংশ থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু জেটলির কাছে শিল্পমহল দাবি তুলেছে, এখনই কর্পোরেট করের হার ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হোক। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, এতটা না হলেও কর্পোরেট করের হার কিছুটা অবশ্যই কমবে। দেশীয় শিল্পপতিরা এখনও নতুন লগ্নিতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। তাই তাঁদের লগ্নিতে উৎসাহ দিতে আরও কিছু কর ছাড় ঘোষণা হতে পারে।

এখন আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা হল বছরে আড়াই লক্ষ টাকা। আড়াই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০ শতাংশ ও ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২০ শতাংশ কর বসে। ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ আয়কর দিতে হয়। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা কমানোর সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ সরকার আয়করদাতার সংখ্যা আরও বাড়াতে চাইছে। কিন্তু কর কাঠামোয় অদলবদল করে আয়করের পরিমাণে সুরাহা দেওয়া যেতে পারে।

প্রশ্ন হল, করে ছাড় দিতে গেলে রাজস্ব আদায় কমবে। তা পূরণ হবে কী করে? অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, স্বেচ্ছায় কালো টাকা ঘোষণা প্রকল্পে প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকার কালো আয় ও সম্পত্তি ঘোষণা হয়েছে। যা থেকে সরকারের আয় হবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় কেউ পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোটে কালো টাকা জমা দিয়ে ৫০ শতাংশ কর মিটিয়ে রেহাই পেতে পারেন। পরে যে সব কালো টাকা ধরা পড়বে তার উপরেও ৮২.৫ শতাংশ পর্যন্ত কর বসানোর ব্যবস্থা করেছে অর্থ মন্ত্রক। যা থেকে আগামী বছরেও আয়ের সম্ভাবনা খোলা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement