প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনায় রাজি হল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে শর্ত দিল, কাগজে-কলমে আলোচনার বিষয়ে ‘বেকারত্ব’ শব্দটি লেখা হবে না। সেই শর্তে আজ রাজ্যসভায় ‘দেশের আর্থিক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদের কার্যসূচি আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ‘বেকারত্ব’ শব্দটি না থাকলেও তা নিয়েই বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে মোদী সরকার।
আজ আলোচনার শুরুতেই মোদী সরকারকে নিশানা করে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন মোদী সরকারকে প্রশ্ন ছোড়েন, আর্থিক বৃদ্ধির সুবিধা কি নিচুতলার মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে? পরিসংখ্যানকে ‘অস্ত্র’ করে তিনি বলেন, ‘‘গৃহস্থের সঞ্চয়ের হার ৫০ বছরে সর্বনিম্ন। গত ছ’বছরে এই প্রথম গ্রামে মূল্যবৃদ্ধির হার শহরের মূল্যবৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে গিয়েছে। দেশের সম্পদ সকলের কাছে, সমান ভাবে পৌঁছচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে। শেয়ার সূচক চড়ায় উঠুক, কোটিপতির সংখ্যা বাড়ুক। কিন্তু কেন ১৫০ জন কৃষক আত্মহত্যা করছেন, তা ভাবতে হবে। নতুন চোখ ধাঁধানো সংসদ ভবনে বসে ভাবা দরকার, এ দেশের প্রতি চার জন মানুষের মধ্যে তিন জন সুষম খাবার পান না। নিচুতলার ৫০ শতাংশ মানুষের হাতে মাত্র ৩ শতাংশ সম্পদ রয়েছে।’’
কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম প্রশ্ন তোলেন, ভারতে বৃদ্ধির হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হলে কেন বাস্তবের জমিতে তার ছাপ পড়ছে না? কেন বেকারত্বের হারে তা ফুটে উঠছে না? কাজে সক্ষম মহিলাদের মাত্র ২২ শতাংশ কাজ করছেন। পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে জনসংখ্যার মাত্র ২৩ শতাংশ কাজ করছেন। বিজেপি সরকারের সাড়ে ন’বছরের আমলে এই সংখ্যাটা থমকে রয়েছে। ২৫ বছরের কমবয়সি স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৪২ শতাংশ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজেপির সুশীল মোদীর যুক্তি, বৃদ্ধির সুফল নিচুতলায় না পৌঁছলে বিজেপি তিনটি রাজ্যে ভোটে জিতত না। আগামিকাল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিতর্কের জবাব দেবেন। ডেরেক বলেছেন, এর জবাবে গত সত্তর বছরের গল্প শোনালে চলবে না। আজকের সামগ্রিক আলোচনা নিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেছেন, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ডেরেক গোড়ায় ইতিবাচক সুর বেঁধে দিয়েছেন।