ছবি সংগৃহীত
মুখে বলতে পারছেন না। কিন্তু রামমন্দির নির্মাণের ‘ভূমি পূজা’ অনুষ্ঠানে লালকৃষ্ণ আডবাণী আমন্ত্রিত হচ্ছেন জেনে বিজেপির প্রবীণ নেতাদের মধ্যে খুশির আবহ।
চল্লিশ কিলোগ্রামের রুপোর ইট মাটিতে গেঁথে মন্দিরের শিলান্যাসের অপেক্ষায় অযোধ্যা। ‘ভূমি পূজা’-র ওই অনুষ্ঠানের জন্য ৫ অগস্ট সময় চাওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে। নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মন্দির তৈরির দায়িত্বে থাকা শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। মোদীর দফতরের সম্মতি মিললে নিমন্ত্রণ পাঠানো হবে আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতীদের। রামমন্দির আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন এঁরা। থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবতও। করোনা- সংক্রমণের আশঙ্কায় বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার কারণে আরও বেশি জনকে আমন্ত্রণ জানানো যাচ্ছে না বলেও তাঁদের দাবি। ফলে কল্যাণ সিংহ, উমা ভারতী, সাধ্বী ঋতম্ভরার মতো রামমন্দির আন্দোলনের চরিত্রদের কত জন অযোধ্যায় হাজির থাকতে পারবেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। আজ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ‘ভূমি পূজা’-র সময়ে অযোধ্যায় হাজির থাকবেন।
কিন্তু ‘ভূমি পূজা’-র দিন এগিয়ে এলেও বিজেপির অধিকাংশ প্রথম সারির নেতার মুখে এখনও লালকৃষ্ণ আডবাণীর নাম নেই। প্রশ্ন উঠেছে, মোদী-অমিত শাহ জমানায় মার্গদর্শক মণ্ডলীতে চলে যাওয়া আডবাণীর নাম করলে রোষের মুখে পড়তে হবে ভেবেই কি এই নীরবতা? আজ অবশ্য রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত টুইট করে বলেছেন, “ভূমি পূজায় আডবাণী থাকবেন জেনে অত্যন্ত আনন্দিত।” তাঁকে সমর্থন করে মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় টুইট করেন, “আশির দশকে নিজেদের হিন্দু বলতে লজ্জা বোধ করত বিনয়ী বাঙালি সমাজের একাংশ। তাকে আমূল পাল্টে দিয়েছিল আডবাণীজির রথযাত্রা।” বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামীর আর্জি, অযোধ্যায় ‘ভূমি পূজা’-র আগে আডবাণী, জোশীদের বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলা বন্ধ করুক মোদী সরকার। ২৪ জুলাই ওই মামলায় লখনউয়ের আদালতে আডবাণীর বয়ান নথিবদ্ধ হবে। জোশীর দিন ২৩ তারিখ।
কিন্তু ওই পর্যন্তই। এখনও অযোধ্যায় আডবাণীকে স্বাগত জানিয়ে কার্যত একটি বাক্যও খরচ করেননি বিজেপির কোনও শীর্ষ নেতা বা মন্ত্রী। আডবাণীর রাম জন্মভূমি আন্দোলন এবং রথযাত্রায় সওয়ার হয়েই কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। দলের সাংসদ সংখ্যা দুই থেকে টেনে তোলার পিছনেও মূল কারিগর তিনিই। লোকসভার ভোট-ময়দানে মোদী-শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া এ বার তিনশোর গণ্ডি পার করেছে ঠিকই। কিন্তু তার ভিতও সেই রাম-রথযাত্রাতেই তৈরি বলে বিজেপির সিংহভাগ নেতা মনে করেন। কিন্তু এখন রামমন্দির তৈরির কাজ শুরুর সময়ে আডবাণীর কথা তাঁর দলই খোলা গলায় বলছে না দেখে রাজনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, তবে কি ৫ অগস্ট প্রচারের যাবতীয় আলো নরেন্দ্র মোদীর উপরেই থাকবে!