ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধী রাজ্যগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মঙ্গলবার। আজই বিজেপি শাসিত দু’টি রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকে নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের আগরায় এক তরুণীকে তাঁর স্বামীর সামনে গণধর্ষণ করা হয়েছে। আবার কর্নাটকে প্রাক্তন মন্ত্রী রমেশ জারকোহোলির বিরুদ্ধে আদালতে বয়ান দিয়েছেন নির্যাতিতা। সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী যখন বিরোধীদের নিশানা করছেন, তখন বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতেই মহিলাদের নিরাপত্তার এই হাল কেন।
আগরার ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। আজ সেটি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে ১৯ বছর বয়সি এক তরুণীকে তাঁর স্বামীর সামনে ধর্ষণ করেছে তিন দুষ্কৃতী। ওই দম্পতি সোমবার বিকেলে একটি বাইকে করে যাচ্ছিলেন। তিন জন তাঁদের থামিয়ে মারধর শুরু করে। তাঁদের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। লুট করা হয় দশ হাজার টাকাও। মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এবং সেই ঘটনার ভিডিয়োও করে দুষ্কৃতীরা।
এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, এর পর তাঁদের টাকাপয়সাও লুট করা হয়। মঙ্গলবার ওই মহিলা আগরার এতমাদুল্লা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা এখনও ধরা পড়েনি। পুলিশ সুপার সত্যজিৎ গুপ্ত জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ বিশেষ দল গঠন করেছে।
অন্য দিকে, কালই কর্নাটকে প্রাক্তন মন্ত্রী জারকোহোলির বিরুদ্ধে আদালতে বয়ান দিয়েছেন এক নির্যাতিতা। জারকোহোলির গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তাঁর আইনজীবী জগদীশ কুমার। অভিযোগ, সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যমে সামনে এলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কর্নাটকের প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মোদী তামিলনাড়ুতে গিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, মহিলাদের অপমান করা ডিএমকে ও কংগ্রেসের সংস্কৃতির অঙ্গ। ডিএমকে নেতা এ রাজার একটি মন্তব্যকে সামনে রেখে তাঁর দলের উদ্দেশে মোদী বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের নেতাদের সংযত রাখুন।’’ এর পরেই ডিএমকে শীর্ষ নেতা এম কে স্ট্যালিন রাজ্যে এক জন মহিলা আইপিএস অফিসারকে যৌন হেনস্থার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। ভোটের প্রচারে স্ট্যালিনের মন্তব্য, ‘‘মোদী দাবি করেছেন, ডিএমকে ও কংগ্রেস জোট তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় এলে মহিলারা নিরাপদ থাকবেন না। আমি বিনয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, যে জায়গায় দাঁড়িয়ে মোদী এ সব কথা বলেছেন সেই জায়গার নাম ধারাপুরা। আর তাঁর ঠিক ৭০ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে পোল্লাচি। সেখানে কী হয়েছিল আপনি কি জানেন না। যদি না-জানেন তা হলে আপনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নন।’’
কোয়ম্বত্তূর জেলার পোল্লাচিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি চলন্ত গাড়িতে এক জন কলেজ ছাত্রীর যৌন হেনস্থার ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়েছিল। সেখানে ওই ছাত্রীর সোনার চেন ছিনিয়ে নেওয়া এবং ভিডিয়ো করার ঘটনাও ঘটেছিল। আবার তামিলনাড়ুতে মহিলা এসপি-র হেনস্থা করার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্ট্যালিন, ‘‘মহিলা এসপিকে হেনস্থা করেছে কে? কোনও গুন্ডা নয় ,আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে যার উপরে সেই স্পেশাল ডিজিপি-র উপরে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে কি এ সব বিষয়গুলি জানানো হয়নি? আপনি শুধু ডিএমকে আর কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানাচ্ছেন!’’