শিক্ষাক্ষেত্রে গৈরিকীকরণ নিয়ে বিতর্কে পুনের এফটিআই, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে নাম জড়ালো মিজোরাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরও। অভিযোগ, বিজেপি ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষাবিদকে মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্তি দেওয়ার জন্য সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়ার নিয়ম ভাঙা হয়েছে।
রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ করার জন্য কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপ-সচিবের দফতর থেকে চিঠি ও নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, সব আগ্রহী প্রার্থীকে নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে হাজির হতে হবে। তাঁদের মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ পেশ করতে হবে। বোঝাতে হবে কেন তিনি মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে আগ্রহী। অভিযোগ, অন্য প্রার্থীরা নিয়ম মেনে দিল্লি গিয়ে সাক্ষাৎকার দিলেও, বিজেপি ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষাবিদের ক্ষেত্রে অন-লাইনে ভিডিও কনফারেন্সে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। পরে উপাচার্যদের নামের যে তালিকা তৈরি করা হয়, সেখানে তিন জনের মধ্যে ওই ব্যক্তির নামই ছিল শীর্ষে।
রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের দাবি, নাগাল্যান্ড বা অরুণাচলের মতো বিধায়কদের হাত করে কংগ্রেস সরকার ফেলতে না পেরে বিজেপি এখন পিছনের দরজা দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে হানা দিতে চাইছে। মিজোরামের মতো ছোট, উপজাতিপ্রধান পাহাড়ি রাজ্যের ক্ষেত্রে যা দুর্ভাগ্যজনক ও সংবেদনশীল। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে চিঠি পাঠিয়ছেন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবকে ঘটনার আইনি দিকটি বুঝিয়ে বলার জন্য রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী।
বিশ্বজিৎবাবু জানান, তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই সংক্রান্ত নির্দেশ, সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা ও এই সংক্রান্ত সব নিয়মেই বলা হয়েছে— সাক্ষাৎকারের নিয়ম সকলের জন্য সমান হতে হবে। কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব বা নিয়ম শিথিক করা চলবে না। কিন্তু কার্যত সেটাই হয়েছে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “রাষ্ট্রপতি জানতে চান এ ক্ষেত্রে আইন মেনে তাঁর কী ভূমিকা হতে পারে? যেহেতু মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সে ক্ষেত্রে সাধ্যমতো হস্তক্ষেপের আশ্বাসও দেন তিনি।”