বাঙালি শিল্পনির্দেশক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত।
গলার নলি কাটা অবস্থায় নালা থেকে এক বাঙালি শিল্প নির্দেশকের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মুম্বইয়ের ভিরারের ঘটনা। ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ওই শিল্পীর দেহে। খুনের অভিযোগে রবিবার ফুরকান খান নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই ওই শিল্পীকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিল্পনির্দেশকের নাম কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। কৃষ্ণেন্দু একজন চিত্রশিল্পীও। হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু কর্মসূত্রে মুম্বইয়ের গোরেগাঁওয়ে থাকতেন। ২০১৫ সালে আইল্যান্ড সিটি’ নামে এক হিন্দি ছবির আর্ট ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। গোরেগাঁওয়ে চার-পাঁচ কর্মীকে নিয়ে নিজের অফিসও চালাতেন। প্রায় ১০ বছর ধরে বলি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত বুধবার আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান এই চিত্রশিল্পী। আর শুক্রবার মুম্বইয়ের ভিরারের একটি নালা থেকে তাঁর গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর দেহ বিছানার চাদরে জড়ানো ছিল। তবে প্রথমেই তাঁর দেহ শনাক্ত করা যায়নি। মুম্বইয়ে কৃষ্ণেন্দুর এক বন্ধুর থেকে খবর পেয়ে শনিবার সেখানে গিয়ে দাদার দেহ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই দিব্যেন্দু চৌধুরী।
আরও পড়ুন: মদ্যপ বাইক চালককে আটক করায় রণক্ষেত্র টালিগঞ্জ, থানায় ঢুকে পুলিশকে মার জনতার
কৃষ্ণেন্দুর প্রতিবেশী এবং কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, বুধবার সন্ধ্যায় তিনি গোরেগাঁওয়ের অফিস থেকে বেরিয়ে ফুরকান খান নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ফুরকানের থেকে তাঁর টাকা পাওনা ছিল। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফেরেননি। ওই রাতে শেষবার রাত ৯টা ১৬ মিনিটে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ অন দেখিয়েছে এবং সে সময়ই তাঁকে শেষবারের মতো ফোনে পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকে মোবাইল ফোনও বন্ধ বলে তাঁর কর্মচারীরা জানান।
আরও পড়ুন: নামাজের পরেই ফের শুনশান রাস্তাঘাট, কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ইদ পালন করল কাশ্মীর
ফুরকানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, ফুরকানও ওই রাতে কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা স্বীকার করে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে প্রথমে। সে পুলিশকে জানায়, ওই রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার কিছু পর থেকেই কৃষ্ণেন্দুর ফোনে একটি কল আসে। তার সামনেই কৃষ্ণেন্দু ফোনের ওপারের ব্যক্তির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন এবং কিছু পর বেরিয়ে যান। তবে ফুরকানের কথায় অসঙ্গতি পুলিশ ধরে ফেলে। পরে জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে ফুরকান। খুনের সময়ে কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ, গাড়ি, ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।