সনিয়া গাঁধী। ফাইল চিত্র।
সনিয়া গাঁধী কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে বললেন, “মোদী সরকার ব্যর্থ। গোটা দেশ আজ অসহায়। কারণ দেশের মানুষের প্রতি রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনও সহানুভূতি নেই।” রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি চিঠি লিখে অভিযোগ তুললেন, “আপনার সরকারের কাছে কোভিড মোকাবিলা ও টিকাকরণের কোনও পরিকল্পনাই নেই।”
কোভিড মোকাবিলায় মোদী সরকারের এখন এমনই দিশাহীন অবস্থা যে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা কার্যত সাংবাদিকদের মুখোমুখিই হতে চাইছেন না। গত দু’সপ্তাহ ধরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেও সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হচ্ছে না। তারই মধ্যে আজ কংগ্রেসের শীর্ষস্তর থেকে সনিয়া ও রাহুল গাঁধী একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন। সংসদীয় কমিটির বৈঠক ডেকে সনিয়া বলেছেন, “কোভিড মোকাবিলার সরকারি ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়নি। মোদী সরকার তাকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।” রাহুল চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “কোভিড মোকাবিলায় পরিকল্পনার অভাব এবং করোনার বিরুদ্ধে আগাম যুদ্ধ জয় ঘোষণা করে দেওয়ার ফলেই কোভিড সংক্রমণ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ভারত বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার ফলে আরও এক বার লকডাউন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।”
একাধিক বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে দেশ জুড়ে লকডাউনের কথা খতিয়ে দেখতে বললেও মোদী সরকার অর্থনীতিতে ধাক্কার কথা ভেবে এখনও লকডাউন করতে নারাজ। রাহুল প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “আমি জানি আপনি অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু আপনার উপদেষ্টারা যে অর্থনীতির অঙ্ক কষছেন, ভাইরাসকে না-আটকালে মানুষের জীবনে তার থেকে অনেক বেশি দুর্ভাগ্য ডেকে আনবে।”
আগেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, সনিয়া ও রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়ার বদলে, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা পাল্টা তাঁদের নিশানা করেছেন। আজ কংগ্রেসের সংসদীয় দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে সনিয়া ফের দাবি করেছেন, এখনই কেন্দ্র সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক। সনিয়ার বক্তব্য, এটা সরকারের সঙ্গে আমাদের লড়াই নয়। আমাদের সঙ্গে করোনার লড়াই। রাহুলও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, সঙ্কটের সময়ে সকলকে নিয়ে এগোনো দরকার। এই চিঠিকে সময়ের প্রয়োজনে দেওয়া পরামর্শ হিসেবেই দেখা হোক। কেন্দ্রের দিক থেকে অবশ্য সাড়া মেলেনি। সনিয়া বলেন, সরকারের নিজের ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠী, কোভিডের বিষয়ে জাতীয় টাস্ক-ফোর্স মোদী সরকারকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ঔদ্ধত্যের সঙ্গে বুক বাজিয়ে বলেছেন, তিনি অতিমারিকে হারিয়েছেন। তাঁর দল অনুগত হয়ে তাঁকে তথাকথিত সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে।