Jal Swapno

জল পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকের বেশি অধরা

মঙ্গলবার জেলার কাজের অগ্রগতি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দফতরের সচিব পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০০
Share:

জল এখনও স্বপ্নই থেকেই গিয়েছে অনেকের কাছে। —ফাইল চিত্র।

Advertisement

কেন্দ্রের ‘জলজীবন মিশন’ (জেজেএম) ও রাজ্যের ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বীরভূম জেলা অনেকটাই পিছিয়ে। এর ফলে জল এখনও স্বপ্নই থেকেই গিয়েছে অনেকের কাছে।

মঙ্গলবার জেলার কাজের অগ্রগতি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দফতরের সচিব পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। এ দিকে, দিনের পর দিন বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর ক্রমশ নীচে নেমে যাওয়ায় বাড়ছে পানীয় জলের চাহিদা।

Advertisement

বীরভূম জেলায় কাজের অগ্রগতি লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই জলস্তর নীচে নেমে যাওয়াকেই দায়ী করেছেন দফতরের আধিকারিকেরা। জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জল জীবন মিশন বা জলস্বপ্ন প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৪০ শতাংশ কাজ হয়েছে।

জল জীবন মিশনের আওতায় সর্বত্র জল পৌঁছয়নি বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, মাটি পরীক্ষা না করে যাঁরা প্রকল্পের নকশা (ডিপিআর) তৈরি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে হবে। সেই দায়িত্ব এসটিএফ এবং রাজ‍্য পুলিশের ডিজিকে দিয়েছেন তিনি। এ দিন তাঁর অভিযোগ, বহু জায়গায় পাইপ পাতা হলেও, জল পৌঁছয়নি ঘরে ঘরে। এমনকী, জলের উৎস সন্ধান না করেই এই সব কাজ করা হয়েছে।

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে জলজীবন মিশন প্রকল্পে বীরভূম জেলায় সাড়ে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ২০২০ সালে কাজ শুরু হলেও কোভিড পরিস্থিতিতে কাজের অগ্রগতি খুব বেশি হয়নি। কাজ এগিয়েছে শুধুমাত্র ২০২২ ও ২০২৩ সালে।

এখন ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৪০ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছেছে। অর্ধেকের বেশি বাড়িতে এখনও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি।

দুবরাজপুর, খয়রাশোল, রাজনগর, মহম্মদবাজার, রামপুরহাট ১, নলহাটি ১, মুরারই ১ ব্লকগুলিতে জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় জেজেএম প্রকল্পের কাজে পরিস্রুত পানীয় জল সব বাড়িতে পৌঁছে দিতে সমস্যা হচ্ছে।

দফতরের আধিকারিকেরা জানান, প্রকল্প অনুযায়ী যেখানে ১০ হাজার গ্যালন জল দরকার সেখানে জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় ২ হাজার গ্যালন জল পাওয়া যাচ্ছে। খয়রাশোল, দুবরাজপুর এলাকায় বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য অজয় নদে বালি স্তরের নীচে অল্প গভীরতায় জল পাওয়ার জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কিন্তু সেখানেও অতিরিক্ত বালি উত্তোলনের ফলে প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আধিকারিকেরা। দফতরের বিভাগীয় আধিকারিক বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এনেছেন বলে জানা গিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জেলা নির্বাহী আধিকারিক দেশবন্ধু হাজরা বলেন, “জেলায় ৩৮৪টি প্রকল্পের জন্য কাজের ওয়ার্ক অর্ডার থাকলেও প্রায় ৭৪টি প্রকল্পে জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।” ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জেলা নির্বাহী আধিকারিক জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement