হলুদ ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে সংসদ ভবন। ছবি: এক্স।
সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গলদের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিল অমিত শাহের অধীনস্থ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই তদন্তের দায়িত্বে থাকবেন সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) অনীশ দয়াল সিংহ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “লোকসভার সচিবালয়ের অনুরোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংসদের নিরাপত্তায় গলদের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ জারি করেছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যার দায়িত্বে থাকবেন সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল অনীশ দয়াল সিংহ। অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞরা এই কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন।” বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “এই কমিটি সংসদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণগুলি খতিয়ে দেখবে। এ ছাড়া কোথায় খামতি রয়ে গিয়েছে সেই সব দিক খতিয়ে দেখে তাদের সুপারিশ জানাবে। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট যত দ্রুত সম্ভব জমা দেবে কমিটি।”
গত ২৮ মে বিপুল আড়ম্বরে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উদ্বোধনের ২০০ দিন পর বুধবার খামতি ধরা পড়ল সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়।
অধিবেশন চলাকালীন দুপুর ১টার কিছু পরে লোকসভার দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মেরে ‘স্মোক ক্র্যাকার’ ছুঁড়তে থাকেন দুই যুবক। তাঁদের নাম সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি। পরে জানা যায়, বিজেপির এক সাংসদের দেওয়া প্রবেশপত্র নিয়েই ওই দু’জন সংসদের ভিতরে দর্শক হিসেবে ঢুকেছিলেন। এই দুই যুবকের সঙ্গে ছিলেন আরও দু’জন। এক মহিলা এবং এক যুবক। আনমোল শিন্ডে এবং নীলম আজ়াদ সংসদের নতুন ভবনের সামনে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এই চার জনকেই গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশি তথ্য অনুযায়ী, সংসদের গ্যালারি থেকে ভবনে ঝাঁপ এবং ‘রং বোমা’ দেখানোর নেপথ্যে রয়েছে মোট ছ’জনের মাথা। ধৃত চার জন দাবি করেছেন তাঁরা কোনও সংগঠনের সদস্য নন। কোনও সংগঠনের সক্রিয় সমর্থকও নন। সংসদে হামলার ২২ বছর পূর্তির দিনেই এই হামলার ফলে দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগ আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বুধবারের ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিতের কাছে এই ঘটনা সংক্রান্ত ব্যাখ্যাও চেয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, “যে চার জন গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা বড়সড় কোনও কাণ্ড ঘটাতে পারেননি। যদি বড় কিছু ঘটে যেত তখন কী হত? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এর জবাবদিহি করতে হবে। সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কী করে খামতি রয়ে গেল তার উত্তর দিতে হবে।”