প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের পাঠানো আমন্ত্রণ নিয়ে এ বার মুখ খুলল ভারত। ইসলামাবাদ থেকে যে আমন্ত্রণ এসেছে, তা নিশ্চিত করেছে বিদেশ মন্ত্রক। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে প্রকাশ, বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেছেন, “এসসিও-র বৈঠকের জন্য আমরা পাকিস্তান থেকে আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” অক্টোবরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশনের বৈঠক রয়েছে। আন্তর্জাতিক ওই মঞ্চের এ বারের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজিত হবে ইসলামাবাদে। পাকিস্তান আগেই দাবি করেছিল, এসসিও-র সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের কাছে ইসলামাবাদ থেকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
ভারতকেও আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ় জ়াহরা বালুচ। পিটিআইয়ে প্রকাশ, শুক্রবার সে বিষয়ে সাউথ ব্লকে বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্রও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন, আমন্ত্রণ পেলেও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০০১ সালে তৈরি হয়েছিল সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন নামে এই মঞ্চ। রাশিয়া, চিন-সহ ছয়টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা সাংহাই শহরে বৈঠকে বসে তা তৈরি করেন। সেই থেকেই নাম সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন। ২০১৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানও এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সদস্য রাষ্ট্র। কিন্তু, প্রতিবেশী দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এই মুহূর্তে বেশ জটিল। উপত্যকায় জঙ্গি অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদে মদত, একাধিক অভিযোগে পাকিস্তানকে বিঁধেছে ভারত। এমনকি এই এসসিও-র অতীত সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরব হয়েছেন সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবারই এক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় সন্ত্রাসবাদে মদতের অভিযোগে বিঁধেছেন পাকিস্তানকে। তিনি বলেছেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন আলোচনার যুগ শেষ। সব কর্মেরই ফল ভুগতে হবে।” তিনি আরও বলেছেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করতে গিয়ে আমরা কখনই সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করতে পারি না। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারত কোনও ভাবেই এ ধরনের হুমকি বরদাস্ত করবে না। পাকিস্তান বরাবর আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত কখনই আলোচনায় বসবে না।”
প্রসঙ্গত, এসসিও-র সম্মেলনে কোনও দেশের রাষ্ট্রনেতাকেই উপস্থিত থাকতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এর আগে চলতি বছরেই জুলাইয়ে কাজ়াখস্তানে এসসিও-র বৈঠকে থাকেননি মোদী। পরিবর্তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। আবার গত বছরেও গোয়ায় এসসিও বৈঠকে আসেননি পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। বদলে তিনি তৎকালীন পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জ়ারদারিকে।