ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট (mod.gov.in)। কিন্তু এ কী? হোমপেজের ঠিক উপরে বাঁ দিকে ‘চিনা’ হরফ কেন! স্ক্রিনের নীচে ‘এরর’ মেসেজ দেখেই বোঝা গেল— হ্যাক হয়ে গিয়েছে সরকারি ওয়েবসাইট। আজ বিকেল ৫টা নাগাদ এই খবর মেলে।
আর ঠিক ৫টা ১৬-য় আসরে নামেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। টুইট করে জানান, হ্যাকিংয়ের পাল্টা পদক্ষেপ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই আগের অবস্থায় ফিরবে সাইট। ভবিষ্যতে এমন উৎপাত ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। কিন্তু কোথায় কী! রাত পর্যন্ত বারবার চেষ্টাতেও খোলেনি সেই ওয়েবসাইট। তত ক্ষণে আবার ‘এরর’ মেসেজ দেখাতে শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র, আইন এবং শ্রম মন্ত্রকের ওয়েবসাইটও।
মন্ত্রী মানলেও, হ্যাকিং-তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর গুলশন রাই। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়নি। পুরোটাই হার্ডওয়্যারের সমস্যা। আরও কিছু সাইট ডাউন হয়েছে। মেরামতি চলছে।’’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কয়েক জন কর্তা যদিও বলছেন, তাঁদের হোমপেজে ‘চিনা’ হরফেই স্পষ্ট, চিনের হ্যাকাররাই দখল নিয়েছে সাইটের। ওই চিনা হরফের অর্থ নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। পাক হ্যাকারদের নিয়ে ভারতের মাথাব্যথা দীর্ঘদিনের। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপসিংহ সুরজেওয়ালা টুইটে বিঁধেছেন ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সগর্ব প্রচারকে। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৪-তে ১৬৫টি, ২০১৫-তে ১৬৪টি ও ২০১৬-তে ১৯৯টি, আর ২০১৭-এর এপ্রিল থেকে ২০১৮-র জানুয়ারি পর্যন্ত ১১৪টি সরকারি সাইট হ্যাক হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী (এনএসজি)-র সাইট তার অন্যতম। কেন্দ্রও মানছে ৪ বছরে কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে ৭০০-রও বেশি সরকারি সাইটে পাক হ্যাকার হানা দিয়েছে।
এ বার হানাদার চিনও! চিনের আগ্রাসন রুখতে সম্প্রতিই আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে আমলা স্তরের বৈঠক করেছে ভারত। পাকিস্তানের পাশাপাশি চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ভারতীয় বায়ুসেনাও। আর আজ তার জেরেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সাইটই হ্যাক হয়ে গেল কি না, ভাবাচ্ছে কূটনীতিকদের। দীর্ঘ সময় পরেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সাইট কেন মেরামত করা গেল না, উঠছে প্রশ্ন।