সংসদীয় বোর্ডেও পর্রীকরকে আনার ভাবনা

রাইসিনা পাহাড়ের শীর্ষ চারে উঠে আসার পর এ বার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও বাড়তে পারে মনোহর পর্রীকরের ভূমিকা। তাঁকে দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংসদীয় বোর্ডে নিয়ে আসার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের মতে, যে ভাবে গোয়ায় এক সুস্থির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিইয়ে নরেন্দ্র মোদী তাঁর মন্ত্রিসভার শীর্ষ চারে পর্রীকরকে নিয়ে এসেছেন, তার পিছনে এক সুচিন্তিত কৌশল রয়েছে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৫
Share:

রাইসিনা পাহাড়ের শীর্ষ চারে উঠে আসার পর এ বার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও বাড়তে পারে মনোহর পর্রীকরের ভূমিকা। তাঁকে দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংসদীয় বোর্ডে নিয়ে আসার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের মতে, যে ভাবে গোয়ায় এক সুস্থির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিইয়ে নরেন্দ্র মোদী তাঁর মন্ত্রিসভার শীর্ষ চারে পর্রীকরকে নিয়ে এসেছেন, তার পিছনে এক সুচিন্তিত কৌশল রয়েছে। গোয়াতে পর্রীকরকে লোকে ‘ছোটে মোদী’ বলে থাকে। এখন বিজেপি শিবিরে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে, দশ বছর পর মোদীর উত্তরসূরি হিসেবেও ‘কালো ঘোড়া’ হতে পারেন পর্রীকর। কিন্তু সে সব পরের কথা। আপাতত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এমনিতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সদস্য হবেন তিনি। পাশাপাশি দলেও তাঁর গুরুত্ব বাড়াতে পর্রীকরকে সংসদীয় বোর্ডের সদস্য করার ভাবনা শুরু হয়েছে। বিদেশ সফর সেরে ফেরার পর এ নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন মোদী।

সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত গোড়া থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পর্রীকরকে আনতে চেয়েছিলেন। লালকৃষ্ণ আডবাণীকে ‘পুরনো আচার’ বলে বেফাঁস মন্তব্য না করলে নিতিন গডকড়ীর পরিবর্তে পর্রীকরই হতেন বিজেপি সভাপতি। এবং লোকসভা নির্বাচনের সময় তিনিই সেই পদে থাকতেন। কারণ, পর্রীকরকে সভাপতি করেই সংবিধান সংশোধন করে সভাপতির মেয়াদ তিন বছর করে দু’দফায় করার কৌশল ছিল সঙ্ঘ নেতৃত্বের। কিন্তু ঘটনাচক্রে গডকড়ী সভাপতি হলেন, দুর্নীতির অভিযোগে সে পদ রাজনাথ সিংহকে ছেড়ে দিতেও হল তাঁকে। সময়ের পরিবর্তনে এখন বিজেপিতে মোদী-অমিত শাহের রাজ। আর পর্রীকরও ঢুকে পড়লেন দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে।

Advertisement

মোদী সরকারের শীর্ষে যে ক’জন মন্ত্রী রয়েছেন, তাঁরা সকলেই সংসদীয় বোর্ডের সদস্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এ ছাড়া সংসদীয় বোর্ডে রয়েছেন মোদী, অমিত, গডকড়ী, বেঙ্কাইয়া নায়ডু, থাওরচন্দ্র গহলৌত, শিবরাজ সিংহ চৌহান, জগৎপ্রকাশ নাড্ডা, রামলাল এবং অনন্ত কুমার। বিজেপির সংবিধানে নিয়ম রয়েছে, সংসদীয় বোর্ডের সদস্য ১২ জনের বেশি হবে না। অমিত সভাপতি হওয়ার পর যখন সংসদীয় বোর্ডের পুনর্গঠন করা হয়, তখনই শিবরাজকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনন্ত কুমারকে সরানোর একটি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু তার বদলে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীর মতো প্রবীণদের। এঁদের নিয়ে যে পথপ্রদর্শক কমিটি গড়া হয়েছে, প্রত্যাশামাফিক তার বৈঠক আজ পর্যন্ত হয়নি।

এই অবস্থায় পর্রীকরকে যদি সংসদীয় বোর্ডে আনা হয়, তা হলে যাঁর উপর সবথেকে বেশি কোপ পড়ার সম্ভাবনা, তিনি অনন্ত কুমারই। একদা আডবাণীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মোদী সরকারে রসায়ন ও সার মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রকাশ্যে তাঁর গতিবিধিও তেমন চোখে পড়ে না। অনন্ত কুমারের আপত্তি সত্ত্বেও কর্নাটকে তাঁর বিরোধী ইয়েদুরাপ্পা বিজেপিতে ফিরে এসেছেন। তার উপর সঙ্ঘ নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে বিজেপির সংযোগকারী নেতার পদ থেকে রামলালকে সরাতে চাইছেন। কিন্তু রামলাল সেই পদ ছাড়লেও পরিবর্তে যিনি আসবেন, তাঁকেও সংসদীয় বোর্ডে নিতে হবে। ফলে সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় বোর্ডের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো না হলে পর্রীকরের প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য কাউকে না কাউকে বাদ দিতেই হবে। তাই মোদীর বিদেশ থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement