প্রতীকী ছবি।
গাড়ি শিল্পের পরে এ বার বিপুল কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা নিয়ে মুখ খুলল খনন শিল্প। চাহিদায় ভাটার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রকের নজরদারির ব্যর্থতাকে কাঠগড়ায় তুলছে তারা। তাদের দাবি, সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে পরে দুর্নীতির দায়ে জড়িয়ে পড়ার ভয় আমলাদের এমন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে যে, সমস্যার কথা জেনেও সমাধানে পা বাড়াতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। ইউপিএ-জমানার শেষে মাথাচাড়া দিয়েছিল নীতিপঙ্গুত্ব। যা নিয়ে মনমোহন সিংহকে নিশানা করতেন নরেন্দ্র মোদী।
খনন সংস্থাগুলির সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান মিনারেল ইন্ডাস্ট্রিজের (ফিমি) দাবি, লগ্নি-বান্ধব পরিবেশ পেলে, ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৫ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হতে পারে এই শিল্পে। কিন্তু বেআইনি খনন বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে শুধু গোয়াতেই কাজ খুইয়েছেন এক লক্ষ কর্মী। কর্নাটক এবং ওড়িশায় এই সংখ্যা যথাক্রমে অন্তত ৮০ হাজার এবং ৫০ হাজার। সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল আর কে শর্মার দাবি, খনন শিল্পে প্রতি এক জন প্রত্যক্ষ কর্মীর সঙ্গে গড়ে জড়িত দশ জন পরোক্ষ কর্মীর ‘ভাগ্য’। এখন অর্থনীতিতে চাহিদায় যেমন ভাটার টান এবং খনন শিল্পের সামনে সমস্যার যে পাহাড়, তাতে সেই ছবি না-বদলালে ২০২০ সালের মধ্যে শুধু এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ভাবে আরও ২.৬৪ লক্ষ কর্মীর কাজ যেতে পারে বলে ফিমি-র আশঙ্কা।
ছাড়পত্রে বেঁধে দেওয়া নিয়মের তোয়াক্কা না-করে খননের জন্য বেশ কিছু জায়গায় তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ফিমি-র প্রশ্ন, নিয়ন্ত্রকের নজরদারি থাকতে দিনের পর দিন নিয়ম ভেঙে এমন অবাধ খনন চলল কী ভাবে? খনন শিল্পের দাবি, একে খননের ছাড়পত্র দীর্ঘ দিন লাল ফিতের ফাঁসে আটকে থাকে। ‘আগে এলে-আগে পাবে’ নীতির বদলে নিলাম চালুর পরে প্রকল্প শুরুও হয়েছে হাতে গোনা। তার উপরে দুর্নীতির দায়ে কয়েক জন আমলা অবসরের পরেও জেলে যাওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সরকারি দফতরে।
ফিমি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব লোচন মহান্তি বলেন, ‘‘কর্পোরেট কর কমায় বাড়তি টাকা আসবে সংস্থার হাতে। চাহিদা বাড়লে, তবেই তা বিনিয়োগ করবে তারা।’’ ফলে দেশে খনিজের চাহিদা বৃদ্ধির চেষ্টা ছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ থাকা রফতানির দরজা খোলা উচিত বলে তাঁদের দাবি।