কর্ণাটকের খনি মাফিয়া রেড্ডি ভাইদের নিয়ে কম বিতর্কে জড়ায়নি বিজেপি। দলের নেত্রী সুষমা স্বরাজের বিরুদ্ধে তাদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী শিবির। কোনও মতে বিতর্কের আঁচ থেকে দলকে বাঁচিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
ফের বিহারে ফিরল সেই ছবি।
দলের টিকিটে খনি মাফিয়া গোপালনারায়ণ সিংহকে রাজ্যসভায় পাঠানো নিয়ে প্রদেশ বিজেপির অন্দরমহলে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। প্রকাশ্যে এ নিয়ে মুখে কুলুপ দিয়েছেন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব।
গোপালের বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রয়েছে। বেশির ভাগই অবৈধ খনন সংক্রান্ত। পাথর মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত রোহতাস জেলার রাজপুত নেতা গোপালনারায়ণ সিংহ। সুশীল মোদী, শাহনওয়াজ হুসেনদের পিছনে ফেলে বিহারে দলের রাজ্যসভার একমাত্র টিকিটটি হাসিল করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রদেশ বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘দলের একেবারে উপরতলার সিদ্ধান্ত। কেউ শব্দ করতে পারবে না। বিরোধ থাকলেও মেনে নিতে হচ্ছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন দেওয়ার কথা বলছেন। গোপালনারায়ণ সিংহকে রাজ্যসভায় পাঠানো সেই বক্তব্যের দ্বিচারিতা। এতে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হবে।’’
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করা গোপালনারায়ণ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ ‘সাজানো’ এবং ‘চক্রান্ত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সরকারি ভাবে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার সম্পদের হিসেব দেখিয়েছেন বিহারের ওই রাজপুত নেতা। তার ছেলে শৈল সিংহের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। বিরোধীদের দাবি, কয়েক’শো কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে গোপালনারায়ণ সিংহের।
বিরোধী শিবিরের খবর, এক সময় গোপালের বিরুদ্ধে চারটি মামলায় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তৎকালীন সরকারে বিজেপি নীতীশ কুমারের সঙ্গী ছিল। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, গোপালের হয়ে সওয়াল করেন নীতীশ কুমারের বন্ধুস্থানীয় এক বিজেপি নেতা। যিনি বর্তমানে কেন্দ্রের প্রভাবশালী এক মন্ত্রী। রাজ্যের বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অনুগামী বলেই বিহারের রাজনীতিতে সকলে জানেন। কিন্তু সুশীল মোদীকে রাজ্যসভায় না পাঠিয়ে কোন অঙ্কে গোপালনারায়ণ বাজি জিতলেন তা নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না জেডিইউ। দলের মুখপাত্র অজয় অলোক বলেন, ‘‘সুশীল মোদীকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে মন্ত্রী করলে বিহারের উন্নয়নে সাহায্য হতো। উনি যোগ্য লোক। আমাদের সঙ্গে সরকারে থাকার সময়ে যথেষ্ট বড় দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব এগোলেন ঠিক উল্টো পথে।’’