বলবন্ত সিংহ রাজোয়ানা। —ফাইল চিত্র।
পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ ১৭ জনের হত্যাকারীদের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। লিখিত ভাবে পঞ্জাব ও চণ্ডীগড় প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহের হত্যাকারী বলবন্ত সিংহ রাজোয়ানার মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা করতে বলা হয়েছে। ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আরও আট বন্দিকে। যত শীঘ্র সম্ভব এই প্রক্রিয়া মিটিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাচক্রে এই বন্দিদের সকলেই শিখ। আগামী ১২ নভেম্বর গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী। তার আগে ‘মানবিকতার খাতিরে’ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ‘দ্য হিন্দু’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পঞ্জাবের প্রধান সচিব (কারা) আর বেঙ্কটরত্নম জানান, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নির্দেশে এসেছে। চণ্ডীগড় প্রশাসনকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার একটি প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে আমাদেরও।’’
তবে কেন্দ্রীয় সরকার বলবন্ত সিংহ রাজোয়ানার সাজা লাঘব করার সিদ্ধান্ত নিলেও, আলাদা করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে ক্ষমাভিক্ষার আর্জি জানাতে হবে। তবেই সংবিধানের ৭২ ধারা মেনে তাতে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি। চণ্ডীগড় প্রশাসনকেই গোটা ব্যাপারটা মেটাতে হবে বলে জানান আর বেঙ্কটরত্নম। তাঁর যুক্তি, ‘‘কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়েই যেহেতু অপরাধ ঘটেছিল, তাই পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনই বা কী ভাবে নেওয়া হবে, সবকিছু তারাই ঠিক করবে।’’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি শাসনের পথেই মহারাষ্ট্র? রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট রাজ্যপালের, জরুরি বৈঠক মোদী মন্ত্রিসভার
১৯৯৫ সালের ৩১ অগস্ট চণ্ডীগড়ে সচিবালয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহ-সহ মোট ১৭ জনের। শিখ জঙ্গি সংগঠন বব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল এই ঘটনা ঘটায়। তাদের সদস্য দিলবর সিংহ বব্বর কোমরে বোমা বেঁধে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। তার সহযোগী তথা অপর আত্মঘাতী জঙ্গি বলবন্ত সিংহ রাজোয়ানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের ঢেউ ঝাড়খণ্ডে! একা লড়ার ঘোষণা এলজেপির, ভাঙনের মুখে এনডিএ
২০০৭ সালে বলবন্তকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় বিশেষ আদালত। সেইসময় প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে অস্বীকার করে সে। ২০১৪ সালে তার হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে শিখ সংগঠন শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি)। বলবন্ত সিংহ রাজোয়ানার মৃত্যুদণ্ড রদ করতে এনডিএ-তে বিজেপির শরিক শিরোমণি অকালি দলের তরফেও মোদী সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তাতেই কি শেষমেশ বলবন্তের সাজা লাঘব করল কেন্দ্র, ইতিমধ্যেই এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এ নিয়ে বিজেপির তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।