সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী মেঘালয়ের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। ফাইল চিত্র।
দলত্যাগী ১২ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজের দাবিতে মেঘালয়ের স্পিকার মেটবা লিংডোর কাছে আবেদন জমা দিয়েছে মেঘালয় কংগ্রেস। তার ভিত্তিতে দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা-সহ ১০ বিধায়কের কাছে জবাব তলব করে নোটিস পাঠালেন স্পিকার। দলত্যাগবিরোধী আইনের দশম তফসিলের অধীনে কেন তাঁদের সদস্যপদ খারিজ হবে না তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি আমপারিন লিংডোর বক্তব্য, “এ শুধু কংগ্রেস বা অন্য কোনও দলের প্রশ্ন নয়, নিজেদের স্বার্থে দলত্যাগ করার এই মানসিকতার বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ না করলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক প্রবণতা হয়ে উঠছে। জনপ্রতিনিধিরা যাতে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা না করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা দরকার।”
যে আমপারিন এখন চার্লস-মুকুলদের সদস্যপদ খারিজের দাবিতে স্পিকারের দ্বারস্থ তিনি নিজেই অতীতে ইউডিপি টিকিটে ভোটে জেতার পরে পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দেন এবং তখন স্পিকার ছিলেন সদ্য প্রদেশ তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া চার্লস পিংরোপ। তাঁর দাবি, যা করা হয়েছে আইন মেনেই করা হয়েছে। সদস্যপদ খারিজের প্রশ্নই নেই।
চার্লস ফোনে বলেন, “আমি নিজে সংশ্লিষ্ট আইন ভাল করেই জানি। সংবিধানের দশম তফসিল ভাল করে পড়ে দেখেছি। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, কোনও দলের দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়ক অন্য দলে যোগ দিলে তাদের সদস্যপদ খারিজ হবে না।”
যদিও কংগ্রেসের যুক্তি, দশম তফসিলের চতুর্থ পরিচ্ছেদে সংশোধনীর পরে দলত্যাগবিরোধী আইন অনেক কড়া হয়েছে। আইনে রাজ্যের অন্য দলে মিশে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল মেঘালয়ের রাজনৈতিক দল নয়। তাদের কোনও অফিস পর্যন্ত নেই। রাজ্যে অস্তিত্বহীন এমন একটি দলে কোনও জাতীয় দলের বিধায়কেরা নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে যোগদান করলে, তা মোটেই আইনসিদ্ধ হবে না। রাজ্যের তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য সর্বভারতীয় তৃণমূলের আত্মপ্রকাশের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন গারো পাহাড়ের কিংবদন্তি নেতা পূর্ণ সাংমা। ২০১২ সালেই মেঘালয়ে এসেছে তৃণমূল। তাই তৃণমূলকে রাজ্যে মোটেই অস্তিত্বহীন দল বলা চলে না।
দশম তফসিলে বিধানসভার সদস্যদের সদস্যপদ খারিজের অধিকার স্পিকারের হাতেই ন্যস্ত। স্পিকার মেটবা মুকুলদের দলত্যাগের পরে বলেছিলেন, ১২ বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানে তিনি আপত্তিকর বা বেআইনি কিছু দেখছেন না। কিন্তু এখন তিনি বিষয়টি নিয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিকে বুধবার কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়া কার্যনির্বাহী সভাপতি জেমস লিংডো ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মানস দাশগুপ্তও তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। লিংডো গত ৩৩ বছর ও মানস ৩৬ বছর ধরে মেঘালয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। চার্লস জানান, “ওই দুই নেতা শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের দলের সদস্য হবেন।”