সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী মেঘালয়ের বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা। ফাইল চিত্র।
‘খেলা হবে’ স্লোগান উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে, ত্রিপুরায়। কিন্তু তেমন কোনও স্লোগান-শোরগোল ছাড়াই মেঘালয়ে বিনা যুদ্ধেই প্রধান বিরোধী দল হয়ে গেল তৃণমূল! তাঁকে নিয়ে ১২ জন কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানের কথা আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করলেন মুকুল সাংমা। বিজেপির নাম না করে দাবি করলেন, দেশে বিভাজনকামী, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে পারার মতো সর্বভারতীয় মঞ্চের প্রয়োজন। এই বৃহত্তর উদ্দেশ্যে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই দলের সঙ্গে আদর্শের মিল পেয়েছেন। রাজ্যে জনকল্যাণে এ বার স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবেন। মুকুলের কথায়, “রাজ্য তথা দেশের মঙ্গলের দিকে তাকিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন ধারা যোগ করলাম। অনেক ভেবেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।”
কংগ্রেসের বা রাজ্যের অন্য কোনও দলের কোনও নেতা বা বিধায়কেরও কি তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে? কী হতে চলেছে মুকুলদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি? কৌতূহল জিইয়ে রেখে মুকুলের জবাব, “আগামী কয়েক দিনে আরও অনেক নতুন ঘটনা ঘটবে। নতুন গল্প শুনতে পাবেন।”
বিকেলে শিলংয়ে পৌঁছন তৃণমূলের মানস ভুঁইয়া ও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মলয় ঘটক। মানস বলেন, “দেশকে অস্থির করে তোলা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা শক্তিকে রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আস্থা রেখেছেন মুকুল, চার্লসদের মতো অভিজ্ঞ নেতারা। তৃণমূল পরিবারে তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি।”
তৃণমূলকে বাছলেন কেন? মুকুল বলেন, “সবল বিরোধী না থাকায় বিজেপি একের পর এক রাজ্য জয় করছিল। কিন্তু মমতাদির নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অশ্বমেধের রথ যে ভাবে আটকে গিয়েছে— তা দেশের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিয়েছে।” তৃণমূল ‘বাইরের দল’— এই তকমা নিয়ে অসুবিধা হবে না? মুকুল বলেন, “আমরা সকলেই এত দিনের চেনা মুখ। আপাতত ২০২৩ পর্যন্ত কার্যকর প্রধান বিরোধী হিসেবে দক্ষ, অভিজ্ঞ সহকর্মীদের নিয়ে কাজ করব। সমমনস্কদেরও আহ্বান জানাব। মানুষের বিশ্বাস ও ভালবাসা জয় করাই হবে প্রধান লক্ষ্য, যাতে ভবিষ্যতে রাজ্যবাসী আমাদের হাতে সরকারের ভার তুলে দিতে ভরসা পান।”
কংগ্রেস ছেড়ে আসা প্রবীণ নেতা চার্লস পিংরোপ বলেন, “কংগ্রেসের ব্যর্থতায় উত্তর-পূর্ব জুড়েই শক্তিশালী বিরোধীর শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে। তাই আমরা এমন মঞ্চ গড়তে চাই যা শুধু মেঘালয়ে নয়, গোটা উত্তর-পূর্বে লড়াই ছড়িয়ে দিতে পারবে। তৃণমূলে যোগদান রাজ্য ও এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে।”