প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের পরে এ বার মেঘালয়ের ভোটেও মূল আকর্ষণ হতে চলেছে মোদী বনাম মমতা! বিনা যুদ্ধেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হওয়া তৃণমূল মেঘালয়ে সরকার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে। মমতার জনসভায় ভিড় দেখে চিন্তিত বিজেপি তাই ভরসা রাখছেন খোদ নরেন্দ্র মোদীর জনসভায়।
মেন্দিপাথারের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় রাজ্যের ইতিহাসে নজিরবিহীন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ভিড় করেছিলেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেও প্রায় তিরিশ হাজারমানুষ এসেছিলেন। সব দলের আগে, তৃণমূল তাদের নির্বাচনী ইস্তাহার ও দশ দফা প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছে। প্রার্থী ঘোষণা করেছে ৫৫টি আসনে।
এ দিকে, বিজেপি এখনও প্রার্থী তালিকাই প্রকাশ করতে পারেনি। শাসক দল এনপিপি ৫৮ আসনে প্রার্থী দিলেও ইস্তাহার প্রকাশ করেনি। তাদের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার সভায় ১০ হাজারের বেশি ভিড় হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি ঘোষণা করল, তারা বাজেটের পরের দিন ২ ফেব্রুয়ারি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে। তাদের হয়ে রাজ্যে অন্তত তিনটি জনসভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তৃণমূলের জনসভাগুলি ভিড় দেখে চিন্তিত বিজেপি মেঘালয়ে প্রচার চালানোর জন্য ২০ জন তারকা প্রচারকের তালিকাও তৈরি করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তালিকায় আছেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, স্মৃতি ইরানি, নিতিন গডকড়ী প্রমুখ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর্নেস্ট মাওরি জানান, প্রধানমন্ত্রী খাসি, গারো ও জয়ন্তীয়া-এই তিন পাহাড়েই জনসভা করবেন।
তৃণমূলের ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা উই কার্ড (ক্ষমতায় এলে প্রতি পরিবারের এক জন করে মহিলাকে মাসে হাজার টাকা প্রদান), মাই কার্ড (২১-৪০ বছরের বেকারদের মাসে হাজার টাকার ভাতা) ও রাজ্য সরকারের ফোকাস (কৃষকদের অ্যাকউন্টে টাকা পাঠানো) প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিজেপি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে। তাদের দাবি, এ ভাবে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের ঠকিয়ে ভোট ‘কেনা’র চেষ্টা করা অনৈতিক।
মেঘালয়ের বর্তমান সরকারে এনপিপি-বিজেপি জোট থাকলেও তারা ভোটে আলাদা লড়ছে। তাদের মতানৈক্য অনেক দিন ধরেই চরমে উঠেছে। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে কোনও দলের পক্ষেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। গত বারের ভোটে ২৫ আসনে জয়ের আশা করে বিজেপি মাত্র ২টি আসন পেয়েছিল। এ বছর তারা ৩৫টি আসনে জিতবে বলে দাবি করছে।
তৃণমূলের আশা, তারা অন্তত ২০টি আসন পাচ্ছেই। আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট গড়ার ভাবনাও রয়েছে দলের। সে ক্ষেত্রে, তৃণমূলকে আটকাতে কি ফের এনপিপি-বিজেপি জোট গড়বে? বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি এম চুবা আও জানান, রাজনীতিতে ঝগড়া বা বন্ধুত্ব কিছুই স্থায়ী নয়। সবই সময় ও পরিস্থিতি সাপেক্ষে পরিবর্তনশীল। ভোটের ফল বেরোনোর পরে যা উচিত মনে হবে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।