Business news

জন্মের আগেই পিতৃহারা, সমাজের বাধা পেরিয়ে লাদাখের জনপ্রিয়তম ‘আলচি কিচেন’-এর মালিক ইনি

কলেজে পড়াকালীন খরচ চালাতে ট্যুরিস্ট গাইড হিসাবে পার্ট টাইম কাজ করতেন। কিন্তু তাতে তাঁর মন টিকছিল না। ইচ্ছা ছিল অন্য কিছু করার।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৩২
Share:
০১ ১৪

অভাবের সংসার। তার ওপর মায়ের ভার। পিতৃহীন নিলজা একসময় ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। কলেজে পড়াকালীন খরচ চালাতে ট্যুরিস্ট গাইড হিসাবে পার্ট টাইম কাজ করতেন। কিন্তু তাতে তাঁর মন টিকছিল না। ইচ্ছা ছিল অন্য কিছু করার।

০২ ১৪

সেই ইচ্ছায় ভর করেই মনের জোরে ব্যাঙ্ক থেকে সামান্য কিছু টাকা ঋণ নেন তিনি। এর পরেরটা যেন রূপকথার গল্প। নিলজা আজ লাদাখের ‘আলচি কিচেন’-এর মালিক। তাঁর অধীনে কাজ করে সংসার চালান লাগাখের অনেক তরুণী।

Advertisement
০৩ ১৪

নিলজা ওয়াংমো যখন লাদাখি খাবার নিয়ে নিজের রেস্তোরাঁ শুরু করতে চেয়েছিলেন, তখন তাঁর এই পরিকল্পনা কেউই ভাল ভাবে নেননি। পরিবার, কাছের বন্ধুরা সকলেই এর বিরোধিতা করেছিলেন।

০৪ ১৪

তাঁদের বিশ্বাস ছিল, পর্যটকেরা লাদাখি খাবার পছন্দ করবেন না। কিন্তু নিলজার উদ্দেশ্য ছিল, লাদাখি খাবার সারা বিশ্বের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা। লাদাখের বাইরেও রেস্তোরাঁ করা এবং দেশের বিভিন্ন শহরের রেস্তরাঁর মূল মেনুর মধ্যে লাদাখি খাবারের জায়গা গড়ে তোলা।

০৫ ১৪

লে থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ে ঘেরা একটি ছোট গ্রাম আলচি। নিলজার জন্মের মাস খানেক আগে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। ওই অবস্থাতেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নিলজার মাকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে মামার বাড়ির ছোট্ট গ্রাম আলচিতেই নিলজার বেড়ে ওঠা।

০৬ ১৪

২০১৬ সালে তিনি এই আলচিতেই ঘরের সঙ্গে রেস্তোরাঁ চালু করেন। লাদাখ খুব জনপ্রিয় পর্যটনস্থল হলেও, এখানে বেশির ভাগ রেস্তোরাঁয় লাদাখি খাবার হিসাবে মোমোই বেশি তৈরি হয়। নানা ধরনের মোমোর সম্ভার রয়েছে রেস্তোরাঁগুলিতে। কিন্তু লাদাখের মানুষের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যে সব খাবার, সেগুলো প্রায় কোনও রেস্তোরাঁতেই ছিল না।

০৭ ১৪

নিলজার ‘আলচি কিচেন’ সেই সব ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করতে শুরু করে। তার সঙ্গে তিনি মিশিয়ে দেন আধুনিকতার ছোঁয়া। ‘আলচি কিচেন’ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, এক বছরের মধ্যেই প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ পর্যটক আসতে শুরু করেন।

০৮ ১৪

এমনকি স্থানীয় বহু মানুষও ওই রেস্তোরাঁয় এসে লাদাখি খাবার উপভোগ করতে শুরু করেন।

০৯ ১৪

রান্না করতে চিরকালই ভালবাসেন নিলজা। রেস্তোরাঁ শুরু করার আগে তিনি দিনের পর দিন লাদাখের হারিয়ে যাওয়া খাবার নিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

১০ ১৪

তাঁর রেস্তোরাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হল টাসি টাগইয়ে চা। আটটি উপাদান দিয়ে তৈরি এই চা। দ্বিতীয় জনপ্রিয় খাবার খাম্বির। এটি ফার্মেন্টেড লাদাখি পাউরুটি। স্থানীয়রা কোনও তরকারি, স্যুপ বা নোনতা চা দিয়ে এই রুটি খান। তবে নিলজা এতে একটু ট্যুইস্ট এনেছেন। রুটির ভিতরে চিকেন, সবজির পুর ভরে দিয়েছেন। ফলে খাবারটি আরও সুস্বাদু হয়ে গিয়েছে।

১১ ১৪

পাস্তার মতো লাদাখি খাবার ছুটাগি। লাদাখি সস দিয়ে পরিবেশন করা হয় এটি। এমন নানা রকমের লাদাখের ঐতিহ্যবাহী খাবারের সম্ভার এই ‘আলচি কিচেন’।

১২ ১৪

নিলজার আরও একটা বড় সাফল্য হল, বহু লাদাখি তরুণ-তরুণীকে কর্মস্থানের সুযোগ করে দেওয়া এবং লাদাখের হারিয়ে যাওয়া খাবারের সঙ্গে তাঁদেরও পরিচয় করিয়ে দেওয়া।

১৩ ১৪

খাবারের মান বজায় রাখতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সমস্ত রান্না করান তিনি। স্থানীয় দুই গরিব শিশুর দেখভালের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন নিলজা।

১৪ ১৪

‘আলচি কিচেন’কে এ বার তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিণত করতে চান নিলজা। লাদাখের বাইরেও তার শাখা খুলতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement