নিতান্ত ঘরোয়া, ঘর-সংসারের কাজ সামলে বাড়ির চারপাশের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতেন। এই বাগানের ভিডিয়ো আপলোড করে সেই তিনিই এখন লাখপতি! ইউটিউব সেনসেশন!
ইদানীং বাড়িতে বসে উপার্জনের অনেক বিজ্ঞাপনই আমাদের চোখে পড়ে। ঘরে বসে এত টাকা রোজগার করে সবার কাছে জলজ্যান্ত উদাহরণই যেন হয়ে উঠেছেন কেরলের এই মহিলা। কী ভাবে?
ওই মহিলার নাম অ্যানি ইউজিন। কেরলের কোচির ভিটিলায় স্বামী স্টিফেন এবং এক সন্তানের সঙ্গে থাকেন অ্যানি। সংসারের কাজ সামলে অ্যানি ভালবাসতেন বাগানের পরিচর্যা। এই বাগানই যে তাঁর নতুন পরিচিতি তৈরি করবে, তাঁকে সেলিব্রিটি করে তুলবে তা কল্পনাতেও ছিল না তাঁর।
প্রথম ভিডিয়ো পোস্ট করেন ২০১২ সালে। ‘গুয়াভা ইন কেরালা হোম’ নামে বাগানের পেয়ারা গাছের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন তিনি। ভিডিয়োর বিষয়বস্তু ছিল পেয়ারার উপকারিতা। প্রথম ভিডিয়োই চমকে দিয়েছিল অ্যানিকে। ৮ হাজার ৫০০ ভিউ এবং ৮টি উৎসাহমূলক মন্তব্য এসেছিল ওই পোস্টে।
এর পরের ভিডিয়ো ছিল ‘পিনাট বাটার ফ্রুট’, মাত্র এক দিনের মধ্যেই এটাও ৭ হাজার ৫০০ লাইক পড়ে এবং ৩১টা কমেন্ট আসে। খুবই উৎসাহিত হন অ্যানি। এর পর তিনি একটার পর একটা ভিডিয়ো বানাতে শুরু করেন।
কখনও উপদেশ দেন, কী ভাবে ভাল গাছের চারা নার্সারি থেকে বেছে নেবেন। কখনও জানান, কী ভাবে বাড়িতে জৈব সার বানাবেন।
এখন মাসে অ্যানি কত উপার্জন করেন জানেন? প্রতি মাসে তাঁর আয় ১ লক্ষ টাকারও বেশি। কোনও কোনও মাসে সেটাও ছাড়িয়ে যায়, জানাচ্ছেন অ্যানি নিজেই।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়েছেন ‘কৃষি লোকাম’। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা এখন তিন লক্ষেরও বেশি। অনেক কৃষকও তাঁর কাছে চাষবাসের পরামর্শ নেন। ইউটিউব কমেন্ট বক্সে গিয়ে তিনি প্রতিটা প্রশ্নের উত্তরও দেন।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পিছনে অবশ্য তাঁর ভাইয়ের অবদানও কম নয়। ভাই ববির পরামর্শেই তিনি ইউটিউবে ভিডিয়ো আপলোড করতে শুরু করেন।
অ্যানি জানাচ্ছেন, তাঁর ভাই একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বাগানের ভিডিয়ো করা, ছবি তোলা অ্যানির নেশা ছিল। সমস্ত ফাইল তিনি বাড়ির কম্পিউটারেই রাখতেন। একদিন ভাই তাঁকে ইউটিউবের কথা বলেন। কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক খারাপ হয়ে গেলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ফাইলগুলো সুরক্ষিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এক সময়ের লাজুক, ঘরোয়া সেই অ্যানি এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। নিয়ম করে দু’দিন অন্তর নতুন ভিডিয়ো আপলোড করেন। সঙ্গে ‘টিপস ফর হ্যাপি লাইফ’ নামে নতুন একটি ইউটিউব চ্যানেলও খুলেছেন।