‘মোকা’র গতিপথের উপর নজর রাখছে মৌসম ভবন। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। প্রতীকী ছবি।
কোথায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’? কখন আছড়ে পড়তে চলেছে? শুধুই কি ঘূর্ণিঝড়, না কি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে আছড়ে পড়বে? এ রকম হাজারো প্রশ্ন এখন আমজনতার মনে উঁকি মারছে। তা সে পশ্চিমবঙ্গই হোক বা ওড়িশা, তামিলনাড়ুই হোক বা অন্ধ্রপ্রদেশ। ‘মোকা’র প্রমাদ গুনছেন এই চার রাজ্যের বাসিন্দারা।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হবে ৬ মে। তার প্রভাবে ওই একই অঞ্চলে ৭ মে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হবে। তারও পর সেটি ৮ মে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেই গভীর নিম্নচাপটি এর পর শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এবং সেটি উত্তর দিক বরাবর অগ্রসর হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে যাবে। এই গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তবেই সেটির নাম হবে ‘মোকা’।
মৌসম ভবনের ‘মডেল অ্যানালিসিস’ বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি ৮ মে-র পর প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তার পর সেটি বাংলাদেশ কিংবা মায়ানমার উপকূলে ১২ অথবা ১৩ মে আঘাত হানতে পারে। তবে এটাই যে ‘মোকা’ চূড়ান্ত গতিপথ, এমনটা অবশ্য বলছেন না মৌসম ভবনের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, যত ক্ষণ না নিম্নচাপ অঞ্চল সৃষ্টি হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না কোন পথে এগোবে ‘মোকা’, কোথায়ই বা আছড়ে পড়বে! তবে যে কোনও মুহূর্তেই এই ঝড় মায়ানমার থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ওড়িশার মধ্যে যে কোনও উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়ার আন্তর্জাতিক মডেল বলছে, চূড়ান্ত ভাবে উত্তর দিকে ঘোরার আগে এই ঘূর্ণিঝড় মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। এমনটা যদি হয়, সে ক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়টি তামিলনাড়ু উপকূল বরাবর এগোবে এবং ১১ মে গতিপথ বদলাবে। উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিক বরাবর এগোনোর সময় আরও বেশ শক্তিশালী হবে এই ঝড়। সে ক্ষেত্রে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপ নেবে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। সেটি আঘাত হানতে পারে বাংলদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল অথবা মায়ানমারে। যদি এই দুই জায়গায় আছড়ে না পড়ে, তা হলে ওড়িশা অথবা পশ্চিমবঙ্গে ‘মোকা’র আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। কোথায় আছড়ে পড়বে, এর গতিপথই বা কী, কত শক্তি সঞ্চয় করছে— সব কিছুর দিকেই নজর রাখছে মৌসম ভবন এবং চার রাজ্যের আবহাওয়া দফতর।