প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক: শৌভিিক দেবনাথ
শিশু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু। তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে। যোগী রাজ্যে এ বার উঠে এল আরও এক মর্মান্তিক ঘটনা, যে ঘটনায় কাঠগড়ায় পুলিশ। মথুরার সুরিয়ার থানার এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে থানার সামনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক দম্পতি। তাঁদের বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তবে অন্য দুই পুলিশকর্মীর তৎপরতায় তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবারের এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুলিশ মহলে। অভিযু্ক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর দীপক নাগরকে সাসপেন্ড করে মথুরার পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন এ়ডিজি অজয় আনন্দ। একই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মাও।
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি সত্যপালের বিরুদ্ধে সুরিয়ার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন যুগেন্দ্র নামে এক স্থানীয় যুবক। যুগেন্দ্রর অভিযোগ, তাঁকে তো বটেই, তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারকে নিয়মিত হেনস্থা করছেন সত্যপাল। কিন্তু ঠিক কী কারণে হেনস্থা, সেটাও স্পষ্ট নয় যুগেন্দ্র বা তাঁর পরিবারের কাছে। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্তভার বর্তায় ইন্সপেক্টর নাগরের উপর।
কিন্তু যুগেন্দ্রর অভিযোগ, দীপক নাগর কোনও তদন্তই করছেন না। বার বার থানায় গিয়ে দরবার করার পরও তিনি কার্যত হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। কারণ, অভিযুক্ত সত্যপালের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে দীপক নাগরের। তিনি উল্টে সত্যপালের পক্ষ নিয়েই কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য রাহুল গাঁধীর, হিংসার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল
অবশেষে বুধবার স্ত্রীকে নিয়ে ফের থানায় যান যুগেন্দ্র কিন্তু সেই সময় থানার পদস্থ কর্তাদের সবাই রাজ্যপালের নিরাপত্তায় ব্যস্ত ছিলেন। এর পর থানার সামনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আগুন লাগার পর দেখতে পেয়ে থানার ভিতর থেকে এক কনস্টেবল একটি কম্বল নিয়ে এসে চাপা দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আরও এক কনস্টেবলও একই ভাবে ছুটে আসেন। দু’জনকেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধারের পর স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যিনি ভিডিয়ো তুলেছেন, আগুন লাগার পর তিনিও চিৎকার জুড়ে দেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ভিডিয়ো তুলেছেন ওই দম্পতির ছেলে।
আরও পড়ুন: চাঁদের আরও কাছাকাছি পৌঁছল চন্দ্রযান-২
কিন্তু এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই দীপক নাগরের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর মহলেও ঘুষ, তোলাবাজি, তদন্তে পক্ষপাতের মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাই এ দিনের ঘটনা জানার পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সংশ্লিষ্ট জোনের এডিজি অজয় আনন্দ জানিয়েছেন, যুগেন্দ্র ও তাঁর পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে মথুরা সিটি পুলিশ সুপারকে। রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মাও আশ্বাস দিয়েছেন, উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।