গত ৬ বছরে গড়ে ১ হাজারের বেশি প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে অসমে। সরকার বদল হলেও তাতে রাশ টানা যাচ্ছে না।
রাজ্যবাসীর একাংশের বক্তব্য, পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের আমল থেকেই রাজ্যে একের পর এক হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু তার প্রতিফলন প্রসূতি মৃত্যুতে পড়ছে না।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের তুলনায় বরাবরই অসমে প্রসূতি মৃত্যুর হার বেশি। ২০১০-১২ সালের হিসেবে রাজ্যে নবজাতকের মৃত্যু হার ছিল ১ হাজারে ৫৪। প্রসূতি মৃত্যুর হার ৩২৮। দু’টিই ছিল জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি। চার বছরেও ছবি বদলায়নি।
এ বছরও প্রসূতি মৃত্যুর জাতীয় গড় রাজ্যের চেয়ে কম বলে নীতি আয়োগে রিপোর্ট জমা পড়েছে। রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে, চা বাগানগুলি ও বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো মন্দ বলেই মৃত্যুহার বাড়ছে। নাবালিকা বিবাহ, পুষ্টির অভাব, অবৈজ্ঞানিক প্রসব, গর্ভবতীদের মদ্যপান ও ধূমপান, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার ও নার্স কম থাকা প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ৬ বছরে রাজ্যে ৬ হাজার ৬৬৩ জন প্রসূতি মারা গিয়েছেন। ২০১১-১২ সালে ১ হাজার ১৪১ জন, ২০১২-১৩ সালে ১ হাজার ২৬৪ জন, ২০১৩-১৪ সালে ১ হাজার ৩৫৯ জন, ২০১৪-১৫ সালে ১ হাজার ২৪৩ জন ও ২০১৫-১৬ সালে ১ হাজার ৭২ জন মহিলা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। চলতি বছর নভেম্বর পর্যন্ত সংখ্যাটি ৫৮৪।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য জেলা, চা বাগান বা চর এলাকা নয়, প্রসূতির মৃত্যুর হার সব চেয়ে বেশি কামরূপ মহানগরে! কাছাড়ে ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৯৫৬ জন প্রসূতি মারা গিয়েছেন। কামরূপ মহানগরে ওই সময়ের মধ্যে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ৬১৪ জন।
রাজ্যবাসী অনেকের বক্তব্য, এতেই বোঝা যায় রাজ্যে প্রসূতি ও নবজাতকদের জন্য জননী সুরক্ষা যোজনা, জননী শিশু সুরক্ষা প্রকল্প, সফল মাতৃত্ব প্রকল্প, মামণি, মাজনি, মমতা, মরম, সুরক্ষা চালু থাকলেও তার সুবিধা সর্বত্র সমান ভাবে পৌঁছচ্ছে না।