সিকিমের নাথুলাতে তুষারধস। আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। নিজস্ব চিত্র।
সিকিমের নাথু লা-য় ভয়াবহ তুষারধস। সেনা সূত্রে খবর, কমপক্ষে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।
সকাল ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ গ্যাংটক থেকে নাথু লা যাওয়ার পথে ১৫ মাইলে হঠাৎই তুষারধস নেমে আসে। সেনা সূত্রে খবর, সে সময় ৫-৬টি গাড়ি বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০ থেকে ৩০ জন পর্যটক তুষারধসের নীচে চাপা পড়েন।এঁদের মধ্যে সাত জন পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকি বহু পর্যটককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁদের সেনার বেস ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিবৃতি দিয়ে সেনা জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছে সেনা। নেমেছে সিকিম পুলিশ, সিকিমের ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন, পর্যটন দফতরও।পাশাপাশি দু’দিকেই রাস্তা বন্ধ। এক প্রান্তে ৩৫০ অন্য প্রান্তে ৪৫০ জনের মতো পর্যটক আটকে রয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২২ জন পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। ৮০টি গাড়িকেও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সেনা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পর্যটকদের কাছে ছাঙ্গু লেক খুবই জনপ্রিয়। সেখানে যাওয়ার পথে ধস নামায় বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা। নাথু লা-কে কেন্দ্র করে অনেকগুলি পর্যটনস্থলে যাওয়া যায়।
পর্যটন কেন্দ্র তো বটেই, নাথু লা আন্তর্জাতিক ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। নাথু লা দিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। প্রাচীন সিল্ক রুটের অন্তর্গত ছিল এই অঞ্চল। ২০০৬ সাল থেকে নাথু লা ধরে ভারত এবং চিনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে আসছে। ২০১১ সালে সিকিমে ভূমিকম্প হওয়ার পর এবং ২০১৭ সালে ডোকলাম বিতর্কের সময় নাথু লা দিয়ে দুই দেশের আমদানি, রফতানি বন্ধ ছিল। ডোকলাম সংঘর্ষের জেরে চিন বন্ধ করে দিয়েছিল কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রাও। সীমান্ত পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পরে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য ফের নাথু লা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চিন। ১৯৬২ সালে চিনের আক্রমণের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নাথু লা-র। এই অঞ্চলে এত বড় বিপর্যয়ে চিন্তিত প্রশাসন।