মুসলিম নাবালিকার বিয়ে নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ কেরল হাই কোর্টের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মুসলিম নাবালিকাকে বিয়ে করলেও তা অপরাধের তালিকায় পড়তে পারে। হতে পারে পকসো মামলাও। একটি মামলার শুনানিতে এমনই রায় দিল কেরল হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নাবালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে শিশু সুরক্ষা আইনে মামলা হতে পারে স্বামীর বিরুদ্ধেও। বাংলার মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় শনিবার এমনই জানাল কেরল হাই কোর্ট।
বাংলা থেকে ১৬ বছরের এক মুসলমান নাবালিকাকে অপহরণ করে বার বার তাকে ধর্ষণ এবং পরে অপরাধ থেকে বাঁচতে বিয়ে করেন এক ৩১ বছরের যুবক। এমনই অভিযোগে কেরল হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়। শনিবার বিচারপতি বাচু কুরিয়ান টমাসের একক বেঞ্চ এই মামলা শোনে। অভিযুক্তের আইনজীবী সওয়াল করেন তাঁর মক্কেল আইনত বিয়ে করেছেন। তা ছাড়া ‘মুসলিম পার্সোনল ল’ অনুযায়ী, ঋতুমতী হলেই সেই মেয়েকে বিয়ে করা যায়। তাই এই মামলায় পকসো আইন দেওয়া যায় না। আইনজীবীর আরও যুক্তি, তাঁর মক্কেল বিয়ে করেছেন ২০২১ সালের মার্চ মাসে। আইনত এখন তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। তাই এখন ধর্ষণের অভিযোগও করা যায় না। এই প্রেক্ষিতে তিনি হরিয়ানা, দিল্লি এবং কর্নাটকের এমনই তিনটি মামলার উদাহরণ দেন।
যদিও কেরল হাই কোর্ট আইনজীবীর এই যুক্তি গ্রহণ করেনি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘যদি কোনও বিয়েতে স্বামী কিংবা স্ত্রী নাবালক কিংবা নাবালিকা হয়, তা পকসো মামলার মধ্যে পড়তে পারে। এর পর ওই আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি টমাসের মন্তব্য, ‘‘আপনার উল্লিখিত মহামান্য বিচারপতিদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত নই। যেখানে বলা হয় একজন মুসলমান নাবালিকাকে বিয়ে করলে তা পকসো আইনের মধ্যে পড়বে না।’’
আদালতের পর্যবেক্ষণ, পকসো আইনের অন্যতম অভিপ্রায়ই ছিল বিয়ের আড়ালে কোনও নাবালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ করা। এর পর অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় কেরল হাই কোর্ট।