প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীর মধ্যে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করতে পারেন না স্বামী। দাম্পত্য বিবাদের একটি মামলার শুনানিতে এ কথা জানাল গুজরাত হাই কোর্ট। বিচারপতি জে বি পাদ্রিওয়ালা এবং বিচারপতি নির্মল মেহতার বেঞ্চ এ বিষয়ে পারিবারিক আদালতের রায় খারিজ করে বলেছে, ‘স্ত্রীকে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা যায় না।’
বনাসকাঁটা জেলার এক মুসলিম দম্পতির বিবাদের ওই মামলা কয়েক বছরের পুরনো। ১৯১৫ সালে বিয়ের পর একটি সন্তান হলেও পরে পেশার নার্স ওই মহিলা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁর স্বামী ইচ্ছার বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যেতে চাইছেন তাঁকে। মহিলার স্বামী বৈবাহিক অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিতে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। স্বামীর পক্ষেই রায় দেয় পারিবারিক আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন জানান স্ত্রী।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, স্ত্রী কখনওই স্বামীর সম্পত্তি নন। তাই ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বা বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে বাধ্য করা যায় না। প্রসঙ্গত, ইউপিএ জমানায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস বর্মার নেতৃত্বাধীন কমিটি বৈবাহিক ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধের তালিকায় রাখার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে সেই সুপারিশের বিরোধিতা করে।
কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, তেমন আইন কার্যকর হলে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানেই অস্থিরতা তৈরি হবে। স্বামীদের হেনস্থা করার জন্যও তা ‘হাতিয়ার’ হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। গত আগস্টে কেরল হাই কোর্ট দাম্পত্য বিবাদের একটি মামলায় রায় দেয়— বৈবাহিক ধর্ষণ আইনি বিচ্ছেদের যুক্তিগ্রাহ্য কারণ হতে পারে। রায়ে বলা হয়, ‘ভারতে বৈবাহিক ধর্ষণ দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত নয়। যদিও তাকে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের আওতায় ফেলা হয়। বিয়ে করেছেন বলে স্ত্রীর ব্যক্তি স্বাধীনতা উপেক্ষা করে তাঁর শরীরের উপর বলপূর্বক স্বামীর কর্তৃত্ব আদতে বৈবাহিক ধর্ষণই।’