কৃষক আন্দোলন সামাল দিতে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা নরেন্দ্র মোদীর। একই অবস্থা মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহানেরও। তার মধ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্যের উদ্বেগ আরও বাড়াল মাওবাদীরা। রীতিমতো বিবৃতি জারি করে কৃষকদের হাতিয়ার তুলে নেওয়ার ডাক দিল তারা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সিপিআই (মাওবাদী)-র মহারাষ্ট্র রাজ্য কমিটির সম্পাদক সহ্যাদ্রির একটি বিবৃতি হাতে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশের ঘটনার পরে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে কৃষকদের। মাওবাদীরা এই লড়াইয়ে সঙ্গ দেবে। যে সব কৃষক সংগঠন এখন আন্দোলনে নেমেছে, তাদের মধ্যে অনেকে ভবিষ্যতে কংগ্রেস বা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবে বলে সতর্ক করেছেন মাওবাদী নেতৃত্ব। সে কারণেই কৃষকদের নিজেদের ‘নেতা’কে বেছে নেওয়ারও ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, সহ্যাদ্রি বলে যে মাওবাদী নেতা এই বিবৃতি জারি করেছেন, তিনি সম্ভবত মহারাষ্ট্রের মাওবাদী নেতা মিলিন্দ তেলতুম্বড়ে। পি চিদম্বরম কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন মাওবাদী দমনে যে ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’ করেছিলেন, তার বিরোধিতা করতে নেমে চিদম্বরমকে ‘সবথেকে বড় জঙ্গি’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন সহ্যাদ্রি। গড়ছিরৌলি, গোন্ডিয়া, চন্দ্রপুর এলাকায় সহ্যাদ্রির সংগঠন সক্রিয়।
বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, মাওবাদী বিবৃতিকে ঢাল করে কৃষক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতাকে ঢাকতে চাইছেন শিবরাজ-মোদী। শিবরাজ গোড়া থেকেই বলছেন, পুলিশের গুলি চলার আগে যাঁরা বিক্ষোভ করছিলেন, তাঁরা কৃষক নন। কৃষকদের ভিড়ে মিশেছিল দুষ্কৃতীরা। এখন মাওবাদীদের ঘাড়ে অভিযোগ ঠেলে দিয়ে পিঠ বাঁচাতে চাইছেন শিবরাজ। তাই এই রিপোর্ট পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে।
কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই স্পষ্ট, শিবরাজ যে অনশনে বসেন, সেটি ভাঁওতা। মৃতদের পরিবারকে জোর করে ডেকে এনে অনশন তুলিয়েছেন একদিনের মধ্যে। এবিপি নিউজের ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছে।’’ কৃষক মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে বিরোধীরা যে লড়াইয়ের ময়দানেই থাকবেন,তা-ও বুঝিয়েছেন তিনি।
মধ্যপ্রদেশের কৃষকরাও আন্দোলনের পথেই থাকছেন। ২১ জুন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের দিন কৃষকেরা প্রতিবাদে শবাসন করবেন। তার পোস্টারও আজ বিলি করা শুরু হয়ে গিয়েছে নানা জায়গায়। স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বাড়ছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের উপরে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের অবশ্য আশা, কৃষক সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।